E-Paper

বেআইনি টাওয়ার ভেঙে টাকা ফেরত ও তদন্তের নির্দেশ কোর্টের

শহরের বিভিন্ন ঘিঞ্জি এলাকায় বেআইনি বহুতল নির্মাণের অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। সেই সব নির্মাণ ভাঙারও নির্দেশ দেয় কোর্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৫ ০৯:২৬
হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, প্রোমোটার সংস্থাকে দু’মাসের মধ্যে ২৬তলা উঁচু ওই টাওয়ার ভাঙতে হবে।

হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, প্রোমোটার সংস্থাকে দু’মাসের মধ্যে ২৬তলা উঁচু ওই টাওয়ার ভাঙতে হবে। —প্রতীকী ছবি।

নিউ টাউনের এক আবাসনের একটি টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে ওই বেআইনি নির্মাণের জন্য নকশা অনুমোদন করেছিলেন যে ইঞ্জিনিয়ারেরা, তাঁদের এবং নকশা অনুমোদনে যুক্ত ‘নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (এনকেডিএ) সব অফিসার ও প্রোমোটার সংস্থার বিরুদ্ধে রাজ্য ভিজিল্যান্সকে প্রয়োজনীয় তদন্ত করতেও বলেছে আদালত। হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, প্রোমোটার সংস্থাকে দু’মাসের মধ্যে ২৬তলা উঁচু ওই টাওয়ার ভাঙতে হবে। প্রোমোটার সংস্থা না ভাঙলে এনকেডিএ-কে ভাঙতে হবে এবং খরচ প্রোমোটার সংস্থার থেকে আদায় করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ওই টাওয়ারের বিভিন্ন ফ্ল্যাট ইতিমধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছে প্রোমোটার সংস্থা। হাই কোর্টের নির্দেশ, ওই টাওয়ারে যাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছেন, কেনার দিন থেকে ৭ শতাংশ বার্ষিক সুদ-সহ ওই দাম তাঁদের ফেরাতে হবে প্রোমোটার সংস্থাকে।

বস্তুত, শহরের বিভিন্ন ঘিঞ্জি এলাকায় বেআইনি বহুতল নির্মাণের অভিযোগ প্রায়ই ওঠে। সেই সব নির্মাণ ভাঙারও নির্দেশ দেয় কোর্ট। কিন্তু নিউ টাউনের মতো পরিকল্পিত নগরীতে এবং নানাবিধ নজরদারি ব্যবস্থার মধ্যে একটি আবাসন কী ভাবে ২৬তলা উঁচু বেআইনি টাওয়ার তৈরি করে ফেলল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এখানেই এনকেডিএ-র ইঞ্জিনিয়ার এবং আধিকারিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আদালতের খবর, ওই জমিটি প্রথমে একটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। পরে মালিকানা বদল হয়ে জমিটি অন্য এক প্রোমোটিং সংস্থার হাতে যায়। তার পরেই মূল নকশা বদলে ওই অতিরিক্ত টাওয়ার তৈরির নকশা অনুমোদিত হয়।

এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের নির্দেশ, পরিবর্তিত নকশায় স্বাক্ষর করা ইঞ্জিনিয়ারদের, নকশা অনুমোদনে যুক্ত আধিকারিকদের এবং প্রোমোটিং সংস্থার বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স কমিশন তদন্ত করবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে হবে। সরকারি অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে।

আদালত সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে প্রথমে একটি সংস্থাকে ওই জমি দেওয়া হয়েছিল। স্থির হয়েছিল, ১৫টি টাওয়ার তৈরি হবে এবং প্রতিটিতে ২৩টি করে তলা থাকবে। সব মিলিয়ে ১২৭৮টি ফ্ল্যাট তৈরি হবে। সেই মতো ফ্ল্যাট বিক্রি হয়। ২০১৪ সালে প্রথম মালিক সংস্থা অন্য একটি সংস্থাকে জমি হস্তান্তর করে। ২০১৫ সালে এনকেডিএ ১২৭৮টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের আংশিক ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ দেয়। ২০১৫ সালেই বাসিন্দাদের না জানিয়ে নতুন মালিক সংস্থা ২৬তলা উঁচু একটি টাওয়ার তৈরির আবেদন করে ও মূল নকশা বদল করে পরিবর্তিত নকশা পায়। টাওয়ারে আবাসনের পাশাপাশি বাণিজ্যিক কাজেরও অনুমতি ছিল।

বাসিন্দারা টাওয়ারটি নিয়ে এনকেডিএ-র কাছে আপত্তি জানালেও তা গ্রাহ্য করা হয়নি। তথ্য জানার অধিকারে আসল নকশার প্রতিলিপিও দেয়নি এনকেডিএ। এর পরেই মামলা করেন বাসিন্দাদের একাংশ। মামলায় হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ এনকেডিএ-কে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়ে মামলার নিষ্পত্তি করেছিল। তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানান বাসিন্দারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Construction court case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy