Advertisement
০১ মে ২০২৪
Justice Abhijit Gangopadhyay

ইংরেজিতে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, ফ্যালফ্যাল চোখে ইংরেজি শিক্ষক: স্যর, বাংলায় প্লিজ

বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে এসে আবার ভর্ৎসনার শিকার হলেন হুগলির ওই শিক্ষক। তখনই বেরিয়ে না গেলে তাঁকে আর্দালি দিয়ে গ্রেফতার করাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

Calcutta High Court Justice Abhijit Gangopadhyay rebukes English teacher as he did not understand English

শুক্রবার বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে এসে আবার ভর্ৎসনার শিকার হলেন হুগলির ওই শিক্ষক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:১৫
Share: Save:

গত ২১ ফেব্রুয়ারি, ভাষা দিবসে কলকাতা হাই কোর্টে চলছে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি। সেখানে ইংরেজির শিক্ষক হয়েও ইংরেজিতে বয়ান দিতে পারেননি এক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। কী ভাবে এত দিন তিনি শিক্ষকতা করছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধও হন।

সে দিনের ঘটনার পর শুক্রবার বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে এসে আবার ভর্ৎসনার শিকার হলেন হুগলির ওই শিক্ষক। তক্ষুনি বেরিয়ে না গেলে তাঁকে আর্দালি দিয়ে গ্রেফতার করাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুনেই আদালত ত্যাগ করলেন ইংরেজির শিক্ষক।

২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়েছিল কি না, তা জানতে ৩ জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারদের তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। গত মঙ্গলবার রুদ্ধদ্বার শুনানিতে তাঁদের প্রত্যেকের আলাদা করে বয়ান রেকর্ড করে আদালত। এক এক করে শিক্ষকদের শুনানিকক্ষের ভিতরে প্রবেশ করতে বলা হয়। একটা সময় ডাক পড়ে হুগলির একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ওই ইংরেজির শিক্ষকের। যে হেতু আদালতে প্রধানত ইংরেজিতেই কথোপকথন হয়, ওই শিক্ষককেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইংরেজিতেই প্রশ্ন করেন। কিন্তু ওই শিক্ষক কিছুই বুঝতে পারেননি। শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। কোনও উত্তরও দিতে পারেননি। উল্টে বিচারপতির কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘বাংলায় প্রশ্ন করুন।’’ ইংরেজির শিক্ষকের এমন কথা শুনে কার্যত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বাংলায় প্রশ্নও করেন। কিন্তু বিরক্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘ইংরেজির শিক্ষক হয়ে ইংরেজি না জানলে ছাত্রদের কী ভাবে পড়াবেন? এটা তো আশা করা যায় না!’’

অনেকে ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ নন, এটা জেনে শুনানির সময় দোভাষী রেখেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সাধারণত জিজ্ঞাসাবাদ বা বয়ান নেওয়ার সময় ওই ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হয়। ওই শিক্ষক প্রথমেই সেই সুযোগ নিতে পারতেন। কিন্তু প্রথমে তিনি কোনও আর্জি করেননি বলেই এক আইনজীবী মারফত জানা গিয়েছে। অথচ বাকিদের মধ্যে অনেকেই দোভাষীর সাহায্য নিয়েছিলেন। মাতৃভাষা দিবসে বাংলাতেই ওই শিক্ষকের বয়ান রেকর্ড হয়।

শুক্রবার সকাল সকাল আবার আদালতে পৌঁছে গিয়েছিলেন ওই ইংরেজির শিক্ষক। আদালত শুরু হওয়ার আগে থেকেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অপেক্ষা করছিলেন। পরে শুনানি শুরু হলে আইনজীবী মারফত বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। কিন্তু তাঁকে দেখামাত্রই রেগে যান বিচারপতি। হুঁশিয়ারি দেন গ্রেফতারির। শুনেই তড়িঘড়ি আদালত ছাড়েন ওই শিক্ষক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE