Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Justice Abhijit Gangopadhyay

‘অভিষেকের নাম আকাশ থেকে পেড়ে আনিনি, কুন্তল নিজে তুলেছেন’, মন্তব্য করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে আবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘বিচার করতে বসে রাজনৈতিক দল দেখি না। দেখি দুর্নীতি আছে কি না।’’

Calcutta High Court justice Abhijit Ganguly says about TMC leader Abhishek Banerjee

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল ঘোষ নিজে তুলেছেন।’’ —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ২০:২৭
Share: Save:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম তিনি করেননি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের কাছ থেকেই সেই নাম এসেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে আবার মুখ খুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার হাই কোর্ট থেকে বেরিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল বলে কোনও কিছু আমার কাছে নেই। যখন এ ধরনের মামলার বিচার করতে বসি, তখন দেখতে চাই দুর্নীতি আছে কি না।’’

বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলে (এবিপি আনন্দে) সাক্ষাৎকার দেওয়ায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা থেকে সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। সোমবার সন্ধ্যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রসঙ্গ বা কোনও সুবিধা নেওয়া— এ সব তো আসে না। সেই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল ঘোষ নিজে তুলেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার যত দূর মনে পড়ে, আমার কাছে যে ডকুমেন্ট জমা পড়ে তাতে কুন্তল নিজে অভিষেকের নাম করেন। এ তো আমার বানানো বা আকাশ থেকে পেড়ে আনা কোনও নাম নয়!’’

গত শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার মধ্যে একটির সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে হুগলির বাসিন্দা কুন্তলের। কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত ওই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর চলতি মাসেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। চিঠিতে কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তাঁকে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছেন।

আদালতকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি, অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়ার ঘটনায় হেস্টিংস থানায় কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান কুন্তল। অভিযোগ প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, কুন্তলের চিঠির মামলায় প্রয়োজনে অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই এবং ইডি।

ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এর পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানো হয়।

শুক্রবার ওই নির্দেশের পর কলকাতা হাই কোর্ট চত্বর ছেড়ে সে দিনের মতো বেরিয়ে ঠিক বাড়িতে ঢোকার মুখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বেশ কিছু মন্তব্য করেন। সারা দিনের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আজ তো আমার মৃত্যুদিন।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘আমি তো নিজে (মামলা) সরাচ্ছি না। এটা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে হচ্ছে। সেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। একটা ডিসিপ্লিন তো আছে। সুপ্রিম কোর্ট এই দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট অর্ডার দিয়েছে, তা মেনে নিতে হবে। এতে যার যত মন খারাপই হোক, ব্যক্তিগত ভাবে যদি কারও হয়ে থাকে, সেখানে বিশেষ কিছু করার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE