গর্ভস্থ ভ্রূণে ‘ওপেন স্পাইনা বাইফিডা’ থাকলে এ ভাবেই শিরদাঁড়ার নীচের অংশে একটি ফুটো থাকে।
কিসের প্রেক্ষিতে এই রায়? বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বয়ান এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুটি ‘ওপেন স্পাইনা বাইফিডা’ রোগে আক্রান্ত। স্পাইনাল কর্ডের নীচের দিকে ফুটো থাকায় এই রোগী হাঁটা-বসায় অক্ষম হবে। মল-মূত্র ত্যাগেও তার কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। অর্থাৎ, এই কষ্ট জীবনভর রোগীকে বহন করতে হবে। তাই মা-বাবার আবেদনের ভিত্তিতে কোর্ট যে সিদ্ধান্ত নিল, তা দৃষ্টান্তমূলক। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত শিশুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।
৩৪ সপ্তাহের এই শিশুর ‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগন্যান্সি’র (এমটিপি) ক্ষেত্রে দুটোই পথ। একটি সিজ়ার, অন্যটি নর্মাল ডেলিভারি। গর্ভস্থ অসুস্থ শিশুটির জীবন থামিয়ে দিতেই কোর্টের এই রায়। ফলে শিশুটিকে জীবিত রাখা যাবে না। কিন্তু শিশুটি যখন ডেলিভারির মাধ্যমে বেরিয়ে আসছে, তখন তো সে
জীবিত। ভূমিষ্ঠ হতেই তার দায়িত্ব বর্তাবে শিশুরোগ চিকিৎসকের
হাতে। তিনি বলতেই পারেন, ‘আমি জীবিত শিশু পেয়েছি। চিকিৎসক হয়ে কী ভাবে তাকে শেষ করতে পারি?’ সেখানে অন্য পদ্ধতিটি হল গর্ভে থাকাকালীন তাকে থামিয়ে দিয়ে মৃত সন্তান প্রসব করানো।
গর্ভে শিশুকে থামিয়ে দেওয়ার পদ্ধতি প্রায় চল্লিশ বছর ধরে বিশ্বে প্রচলিত। যাকে বলে ‘ফিটাল রিডাকশন’। ভ্রূণে যখন সমস্যা দেখা দেয়, তখন গর্ভস্থ সেই শিশুর হার্টে পটাশিয়াম ক্লোরাইড
দিয়ে তার হৃৎস্পন্দন থামিয়ে দেওয়া হয়। আইভিএফ পদ্ধতিতে যখন একাধিক ভ্রূণ চলে আসে, তখন
আমরা এই পদ্ধতিতেই একটি বা দু’টি ভ্রূণের বৃদ্ধি থামিয়ে দিয়ে থাকি। মুশকিল হল, আদালতের রায়ে সেই পদ্ধতির কথা স্পষ্ট উল্লেখ নেই। এমনিতেই এই পদ্ধতি মানতে রোগীকে যেতে হবে এমটিপি লাইসেন্স আছে এমন হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে শিশুটিকে গর্ভেই থামিয়ে দিয়ে কি বার করা হবে? সেই জায়গায় ধোঁয়াশা থাকছে।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে উঠছে একটা প্রশ্ন, চিরাচরিত ভাবনা থেকে বেরোনোর কি তবে সময় হল?
মনে রাখতে হবে, ইংল্যান্ডের মতো বেশ কয়েকটি উন্নত দেশে এমটিপি-র কোনও সময়সীমা নেই। এই ঘটনা সে দেশে হলে আদালতের রায়ের অপেক্ষা করতে হত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy