Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তার কাটতে এল ডায়মন্ড কাটার, তবে গতি পেল তদন্ত

বিকল্প: ওষুধের পোড়া স্টোর বন্ধ। তাই মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের সাততলার এই ঘরেই অস্থায়ী ভাবে ওষুধ মজুত রাখার ব্যবস্থা করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস শনিবার জানান, ৫০ শতাংশ ওষুধ মজুত করা হয়ে গিয়েছে এ দিনই। যদিও হাসপাতালের বহির্বিভাগে ওষুধের অভাবের চিত্র এ দিনও স্পষ্ট। সুপারের দাবি, ‘‘বহির্বিভাগের তিনতলায় ৩০১, ৩০২ নম্বর ঘরের পাশাপাশি ৩১২ নম্বর ঘরেও সোমবার থেকে ওষুধ দেওয়া শুরু হবে। পরিষেবাও এখন অনেকটা স্বাভাবিক।’’ নিজস্ব চিত্র

বিকল্প: ওষুধের পোড়া স্টোর বন্ধ। তাই মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবের সাততলার এই ঘরেই অস্থায়ী ভাবে ওষুধ মজুত রাখার ব্যবস্থা করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস শনিবার জানান, ৫০ শতাংশ ওষুধ মজুত করা হয়ে গিয়েছে এ দিনই। যদিও হাসপাতালের বহির্বিভাগে ওষুধের অভাবের চিত্র এ দিনও স্পষ্ট। সুপারের দাবি, ‘‘বহির্বিভাগের তিনতলায় ৩০১, ৩০২ নম্বর ঘরের পাশাপাশি ৩১২ নম্বর ঘরেও সোমবার থেকে ওষুধ দেওয়া শুরু হবে। পরিষেবাও এখন অনেকটা স্বাভাবিক।’’ নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০০:১৮
Share: Save:

বাগড়ি-কাণ্ডের পরে শহরের বাজারগুলির তারের জট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিল পুর-প্রশাসন। সেই তারের জটের জেরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পোড়া ওষুধের স্টোরে গিয়েও নাস্তানাবুদ হয়েছে ফরেন্সিক দল। দু’দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েও নমুনা সংগ্রহের জন্য স্টোরের পোড়া মোটা তার কাটতেই পারেননি ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। শেষে দমকলের ‘ডায়মন্ড কাটার’ যন্ত্র আনিয়ে শুক্রবার সেই তার কাটা হয়। তার পরে শনিবার আবার সেখানে যায় ফরেন্সিক দল। করা হয় ঘটনার পুনর্নির্মাণ।

অগ্নিকাণ্ডের পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ দ্বিতীয় বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পোড়া ওষুধের স্টোরে তদন্তে গিয়েছিলেন ফরেন্সিক ডিরেক্টর ওয়াসিম রাজা এবং তাঁর দল। পোড়া এবং অক্ষত কয়েকটি জিনিসের নমুনা সংগ্রহের সময়ে সিলিং থেকে ঝুলতে থাকা একটি মোটা তারের জট দেখে সন্দেহ হয় তাঁদের। রাজা বলেন, ‘‘তারগুলোও ল‌্যাবে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা দরকার। শর্ট সার্কিট হয়ে থাকলে

তার আন্দাজ পাওয়া যেতে পারে।’’ রাজার নির্দেশে তার কাটতে এর পরে আপ্রাণ চেষ্টা চালান কয়েক জন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ, কিন্তু তা কাটা যায়নি। বাগড়ি-কাণ্ডের পরেও দেখা গিয়েছিল, মার্কেটের মধ্যে অসংখ্য তারের জটলা। অবস্থা এতটাই হাতের বাইরে ছিল যে, তারের জটে আটকে গিয়ে প্রয়োজনের সময়ে মইটাই ব্যবহার করতে পারেনি দমকল। বাগড়ি মার্কেটের মতোই তারের জটে অবরুদ্ধ শহরের অন্য বাজারগুলিও। তবে দীর্ঘদিন থেকেই পুর-প্রশাসন তারের জট কাটাতে বৈঠক করে চললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শুক্রবার বাগ়়ড়ি মার্কেট নিয়ে এক বৈঠকেও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গলায় ফের শোনা গিয়েছে পুরনো বাজারগুলির তার-প্রসঙ্গ। মেডিক্যাল কলেজে একই সমস্যা হওয়ার পরেও প্রশাসনের হুঁশ ফিরবে কি না, প্রশ্ন।

ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পরে রাজা বলছিলেন, ‘‘সাধারণত অগ্নিকাণ্ডের পরে ঘটনাস্থলকে দু’টি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি অংশ আগুনের উৎস। অন্যটি আক্রান্ত।’’ পোড়ার ধরন দেখে এখন আগুনের উৎস এবং আক্রান্ত অংশকে পৃথক করার কাজ চলছে। প্রথমিক ভাবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের এখন অনুমান, স্টোরের ভিতরের দিকের ঘরটি সবচেয়ে বেশি পুড়লেও সেটিই আগুনের উৎস না-ও হতে পারে। তাঁদের ধারণা, মাঝের ঘরের কম্পিউটার আর সিলিংয়ের তারই এখনও পর্যন্ত আগুনের উৎস হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে। রাজা বলেন, ‘‘শর্ট সার্কিট কিন্তু কোনও নেগেটিভ বিষয় নয়। তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ যাওয়ার সময়ে বাধা পেলে সে অন্য রাস্তা ধরতে চায়। তখনই ঘটে বিপত্তি।’’

পোড়া স্টোর থেকে একটি মাইক্রোওয়েভ অভেন পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেটিতে খাবার গরম করে খেতেন বলে জানাচ্ছেন স্টোরের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডের আগের রাতেও ওই মাইক্রোওয়েভ অভেনটি ব্যবহার করা হয়েছিল। রাতে থাকা এক কর্মী শনিবার বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে আনা খাবার গরম করে খেয়েছিলাম আমরা।’’ সেটি ঠিকমতো বন্ধ করা হয়েছিল তো? ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘‘ল‌্যাবে টেস্ট চলছে। দিন কয়েকের মধ্যেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE