Advertisement
E-Paper

Calcutta Medical College: চিকিৎসক আর ওষুধের ঘাটতি নিয়ে চলছে মেডিক্যাল

ইউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিয়োথোরাসিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে শিক্ষক চিকিৎসক প্রায় না থাকায় রোজ বহির্বিভাগ হয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ০৭:০৮

ফাইল চিত্র।

বেলা সাড়ে ১২টা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভিতরে তখন মাত্র ছ’টি ট্রলি। তার দু’টি আবার ভাঙা। দিনে গড়ে ১৬০ থেকে ২০০ জন রোগী এই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি হন। গড়ে ৬ হাজার রোগী বহির্বিভাগে আসেন। প্রশ্ন, যদি একসঙ্গে পাঁচ জন রোগীও আসেন, তা হলে আধার কার্ড দেখিয়ে ট্রলি পাবেন চার জন! আর এক জন কী করবেন? জরুরি বিভাগের এক নিরাপত্তারক্ষীর কথায়, ‘‘ট্রলি তো আছে ১৮টা মতো। বহির্বিভাগের রোগীদের ট্রলি দেওয়া বারণ। অনেক রোগী ঠিক মতো হাঁটতে পারেন না, তখন দিতেই হয়।’’ জরুরি বিভাগের ভিতরেই লেখা রয়েছে ‘রোগী সহায়তা কেন্দ্র’। কিন্তু লোক নেই। অগত্যা কিছু জানতে ভরসা অন্য রোগীর পরিজন বা নিরাপত্তারক্ষী।

হাবড়ার বাসিন্দা প্রণব সাহা তেমনই এক নিরাপত্তারক্ষীর থেকে জানতে চাইলেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষার তারিখ কোথায় পাব?’’ উত্তর এল, ‘‘এক নম্বর গেটের কাছে সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরিতে চলে যান।’’ এক নম্বর গেট কোথায়? সেটাও জিজ্ঞাসা করতে হল কয়েক জনকে। সেখানে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রক্ত পরীক্ষার তারিখ মিলল। রোগীর পরিজনের একাংশের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগারের কাউন্টার থেকে কাগজ দেওয়ার পরে খুঁজতে হচ্ছে কোথায় যেতে হবে। দিগ্-নির্দেশ বোর্ড থাকলেও তা বহু জায়গায় অস্পষ্ট বা গাছের আড়ালে গিয়েছে। আর এমআরআই করতে হলে অন্তত দেড় মাসের অপেক্ষা!

ইউরোলজি, নেফ্রোলজি, কার্ডিয়োথোরাসিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে শিক্ষক চিকিৎসক প্রায় না থাকায় রোজ বহির্বিভাগ হয় না। অস্ত্রোপচারের তারিখ পেতে মাস ঘুরে যাচ্ছে। এ দিকে অন্যান্য রোগের বহির্বিভাগে থিকথিকে ভিড়। সকাল সাড়ে ন’টায় টিকিট করার লাইন নিউ ওপিডি বিল্ডিংয়ের বাইরে বহু দূর পর্যন্ত গিয়েছে। তবে হাসপাতালের বাইরের দোকানে ১০ টাকায় মিলছে অনলাইন টিকিটের প্রিন্ট আউট। যদিও তা নথিভুক্ত করতে ফের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। বহির্বিভাগে সব ঘরেই যে সকাল ৯টায় চিকিৎসক আসছেন তেমন নয়। মেডিসিনের চিকিৎসক দেখাতে আসা করিমপুরের অভিজিৎ রায়ের কথায়, ‘‘রাত তিনটে থেকে লাইন দিয়ে টিকিট কাটলাম। ১০টা বেজে গেল, ২০৮ নম্বর ঘরে ডাক্তারই আসেননি। তাড়াতাড়ি দেখানো না হলে আজ ফিরতে পারব না।’’ পেডিয়াট্রিকের বিশেষ ক্লিনিকেও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে বাবা-মায়েরা।

গোটা হাসপাতাল চত্বরে আটটি পানীয় জলের জায়গা থাকলেও অধিকাংশই খারাপ। একটি মাত্র ‘ওয়াটার এটিএম’-এ বেলা সাড়ে ১১টায় দেখা গেল, ‘কাজ চলছে’ লেখা বোর্ড ঝুলছে! অগত্যা লম্বা লাইনে বোতল হাতে দাঁড়িয়ে থাকুন, না-হলে দোকান থেকে জল কিনে খান। ন্যূনতম পানীয় জলের পরিষেবা হাসপাতালে ঠিক মতো থাকবে না কেন, প্রশ্ন চিকিৎসকদের একাংশের।

ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র থেকেও প্রেসক্রিপশনে লেখা সব ওষুধ মেলে না। ডোমকলের মহম্মদ কালাম বলেন, ‘‘পায়ে ঘা হয়েছে। দু’টি ওষুধ পেলাম, আরও দু’খানা কিনতে হবে।’’ ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে ওষুধ কিনে বেরোনোর পথে সস্ত্রীক মহম্মদ মুক্তাহার বলেন, ‘‘সামান্য কাঠের কাজ করি। নামেই সব ফ্রি। ৫০০ টাকার ওষুধ তো কিনতে হল।’’

Calcutta Medical College Hospital Crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy