Advertisement
E-Paper

ঝড়ে বিকল সিগন্যাল, নিয়ম ভেঙে ছুটছে গাড়ি

রবিবার ঠনঠনিয়া ও রাজাবাজারের সংযোগকারী রাস্তার সামনে দেখা গেল এমনই দৃশ্য।

দীক্ষা ভুঁইয়া ও প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৩:১৭
ভগ্নদশা: আমপানের দাপটে ভেঙে ঝুলছে সিগন্যাল পোস্ট। রবিবার, শেক্সপিয়র সরণিতে। নিজস্ব চিত্র

ভগ্নদশা: আমপানের দাপটে ভেঙে ঝুলছে সিগন্যাল পোস্ট। রবিবার, শেক্সপিয়র সরণিতে। নিজস্ব চিত্র

আমপানের দাপটে রাস্তা জুড়ে পড়ে আছে একের পর এক গাছ। গাছের সঙ্গে তার জড়িয়ে পড়ে বিপর্যস্ত শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা। বিকল কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের আওতাধীন সিগন্যাল ব্যবস্থাও। বিভিন্ন রাস্তায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে লাল, হলুদ, সবুজ বাতি। পরিস্থিতি সামলাতে ট্র্যাফিক পুলিশ এখন গাড়ি সামলানোর থেকেও বেশি ব্যস্ত গাছ কাটিয়ে রাস্তা সচল করার কাজে। ফলে অরক্ষিত রাস্তা। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। আর যাঁরা নিয়ম মানতে চাইছেন, বিপদ যেন তাঁদের পিছনেই তাড়া করছে।

রবিবার ঠনঠনিয়া ও রাজাবাজারের সংযোগকারী রাস্তার সামনে দেখা গেল এমনই দৃশ্য। সিগন্যাল বিকল থাকায় এক গাড়িচালক গতি কমিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিলেন রাস্তা পার হবেন কি না। ঠিক তখনই শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করতে যাওয়া একটি ছোট লরি সেই গাড়ির পিছনে দাঁড়িয়ে জোরে হর্ন বাজাতে শুরু করল। শুধু তাই নয়, গাড়িচালক সিগন্যাল বোঝার জন্য অপেক্ষা করায় তাঁকে উদ্দেশ্য করে লরি থেকে উড়ে এল গালাগালি। এর পরেই পাশ কাটিয়ে লরিটি বেপরোয়া ভাবে মোড় পেরিয়ে যায়। একই ছবি দেখা গেল বৌবাজার মোড়েও। সেখানে অবশ্য সিগন্যাল অক্ষত। কিন্তু কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না। ফলে একের পর এক গাড়ি, বাইক লালবাতি উপেক্ষা করে ইচ্ছে মতো চলে গেল।

রবিবারই দেখা গেল, ধর্মতলা মোড়ে ভেঙে পড়লেও চালু ছিল সিগন্যাল। কিন্তু তা চালকদের চোখে পড়ছে না। ফলে ওই প্রশস্ত রাস্তায় পৌঁছেও আশপাশে খেয়াল না করেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন অনেকেই। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ জানাচ্ছে, দক্ষিণেই বেশি সিগন্যাল পোস্ট ভেঙে পড়েছে। সাউথ ট্র্যাফিক গার্ডের পাশাপাশি যাদবপুর, রিজেন্ট পার্ক ট্র্যাফিক গার্ডে সিগন্যাল ব্যবস্থা কার্যত অবশিষ্ট নেই। হরিশ মুখার্জি রোডে গুরুদ্বারের কাছে রাস্তার দু’ধারে প্রায় সব গাছ পড়ে গিয়েছে। ওই পথে সিগন্যালের কিছু অবশিষ্ট নেই। সিগন্যাল খারাপ শ্যামবাজার মোড়েও। তবে রাস্তা বা মেট্রোর কাজের জন্য বাইপাসে আগেই গাছ কাটা পড়েছিল। তাই সেই দিকে সিগন্যাল পোস্ট মোটামুটি অক্ষত।

কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) রূপেশ কুমার জানান, রাস্তা থেকে গাছ সরানোর পরে সিগন্যালের খুঁটিগুলির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখতে হবে। চেষ্টা করা হচ্ছে, ভেঙে পড়া কিংবা নষ্ট হওয়া সিগন্যালের খুঁটিগুলি দ্রুত সারাই করার। কিন্তু গাছ না সরানো পর্যন্ত কিছুই সম্ভব নয়। ট্র্যাফিক পুলিশের মতে, লকডাউন শিথিল হলেও স্বাভাবিক সময়ের থেকে এখন পথে গাড়ি কম। কিন্তু চালকদের এই প্রবণতা যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।

লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ এলাকায় সিগন্যাল রয়েছে ৫৫০টি। তার প্রায় ৫০ শতাংশ সিগন্যালই ঝড়ের বলি হয়েছে। গাছ কাটিয়ে সিগন্যাল ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে খানিকটা সময় লাগবে। লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন পর্যন্ত ১০০টি সিগন্যাল পোস্টের মেরামতি চলছে।

প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি, সার্জেন্ট, অন্যান্য কর্মীরা গাছ কাটানোর কাজ নিয়েই ব্যস্ত। ফলে রাস্তার মোড়গুলিতে ট্র্যাফিক পুলিশের কড়া নজরদারি থাকছে না। সেই সুযোগই নিচ্ছেন চালকদের বড় অংশ। সিগন্যাল পোস্টের সঙ্গে ভেঙে গিয়েছে কিংবা বিকল হয়েছে মোড়ের সিসি ক্যামেরাও। যার জেরে গাড়িচালক ট্র্যাফিক আইন ভাঙলেও, তা রেকর্ড করা সম্ভব হচ্ছে না ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের পক্ষেও।

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy