কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া-বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য সরগরম। এই পরিস্থিতিতে ওই মামলাটির বিশেষ তাৎপর্য আছে বলে মনে করছেন অনেকে। —ফাইল ছবি
নিজেরাই নির্বাচন সংঘটিত করে ছাত্র সংসদ গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। কিন্তু সেই ছাত্র সংসদের বৈধতা কতটা, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তেমন ভাবে কিছু বলতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষও।স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, ওই ছাত্র সংসদের ভবিষ্যৎ কী? অন্য দিকে, বিভিন্ন আন্দোলনের জেরে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে ব্যাহত হচ্ছে রোগী পরিষেবা। সেই দুর্ভোগ ঠেকাতে পাকাপাকি নির্দেশিকা তৈরির আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে।
আগামী ২২ ডিসেম্বর তাঁরা ছাত্র সংসদের নির্বাচন করছেন বলে জানিয়ে এবং তাতে সহযোগিতাচেয়ে মঙ্গলবার কলকাতা মেডিক্যালের সব বিভাগীয় প্রধানকে চিঠি পাঠিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নির্বাচনের বিষয়ে কোনও চিঠি পাঠানো হয়েছে কি না, তা খোলসা করেননি কর্তৃপক্ষ। যদিও আন্দোলনকারীরা সোমবারই দাবি করেছিলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি বা ইমেল পাঠিয়ে নির্বাচনের বিষয়টি জানিয়ে রাখা হবে। আন্দোলনকারীদের তরফে অনিকেত কর বলেন, ‘‘ইমেল করে নির্বাচনের ‘এসওপি’ জানানো হয়েছে। লিখিত চিঠিও পাঠানো হয়েছে।’’যেখানে জানানো হয়েছে, কলেজ কাউন্সিল ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছিল। আগের সেই ঘোষণা মতোই নির্বাচন করা হচ্ছে। ওই দিনই ভোট গণনার পরে ছাত্র সংসদ গঠন করে তা অধ্যক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে।
কলকাতা মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের কথায়, ‘‘২২ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে বলে কলেজ কাউন্সিল যে ঘোষণা করেছিল, তা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে নির্বাচন করতে না পারার বিষয়টি জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু ছাত্রদের নিজেদেরই নির্বাচন সংঘটিত করার বিষয়ে অধ্যক্ষের শুধু মন্তব্য, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি ছাড়া আমরা নির্বাচন করতে পারি না।’’ সোমবার অনশন উঠে গেলেও এ দিনও অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষ তথা সুপার অঞ্জন অধিকারী মেডিক্যালে আসেননি। তাঁরা স্বাস্থ্য ভবনে বসেই কাজ করেছেন। সেখানেই জরুরি ফাইল নিয়ে হাজির হচ্ছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক থেকে আধিকারিকেরা। এক শিক্ষক-চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সন্তানসম পড়ুয়াদের উদ্ধত আচরণ ও দুর্ব্যবহারের জন্য মেডিক্যালের প্রশাসনকে স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে বসতে হচ্ছে। এটা খুবই সমস্যার।’’
অন্য দিকে, বারংবার আন্দোলনের জেরে কলকাতার সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা ব্যাহত হওয়া ঠেকাতে পাকাপাকি নির্দেশিকা যাতে তৈরি করা যায়, সেই আবেদন জানিয়ে এ দিন হাই কোর্টে মামলা করেছেন সুমন সেনগুপ্ত নামে এক আইনজীবী। এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন।চলতি সপ্তাহেই সেই মামলার শুনানি হতে পারে। মামলাকারীর আর্জি, পুরোদস্তুর নির্দেশিকা তৈরি হওয়ার আগে আদালত যেন একটি অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশও দেয়। প্রসঙ্গত, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়ুয়া-বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য সরগরম। এই পরিস্থিতিতে ওই মামলাটির বিশেষ তাৎপর্য আছে বলে মনে করছেন অনেকে। উল্লেখ্য, আর জি কর হাসপাতালে বিক্ষোভের সময়েও জনৈক আইনজীবী স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার কথা বলে মামলা করেছিলেন।
এ দিন নির্বাচনের ‘এসওপি’ জারি করেছেন পড়ুয়ারা। সেখানে প্রার্থী হওয়ার নিয়মকানুনের পাশাপাশি মনোনয়নপত্র জমা, তা প্রত্যাহার এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিনক্ষণ জানানো হয়েছে। মনোনয়ন জমা বা প্রত্যাহারের জন্য সুজাত ভদ্রকে ইমেল করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy