ওলা, উবের, মেরুক্যাব-এর মতো লাক্সারি ট্যাক্সি পরিষেবা সংস্থাগুলিকে নানা বিধিনিষেধে বাঁধার লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোল পরিবহণ দফতর। যার মধ্যে রয়েছে সিসিটিভি বসানের শর্তও। যদিও হলুদ বা নীল-সাদা ট্যাক্সির ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম কার্যকর না করে বেসরকারি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এই কড়া মনোভাবে প্রশ্ন উঠেছে সরকারের অন্দরেই।
শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য পরিবহণ দফতর ও কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থা ওলা, উবের, মেরু, বুক মাই ক্যাব, ট্যাক্সি ফর শিওরের প্রতিনিধিদের একটি বৈঠক হয়। সেখানেই ওই বিধিনিষেধের কথা বলা হয়। পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শর্তগুলি হল— ১. প্রত্যেক সংস্থাকে সরকারি লাইসেন্স নিতে হবে। কলকাতায় একটি অফিস ও সর্বক্ষণের কন্ট্রোল রুম তৈরি করতে হবে। ২. দু’বছর অন্তর লাইসেন্স নবীকরণ করাতে হবে। ৩. পারমিট নিতে সরকারের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। ৪. পরিবহণ পরিষেবার শর্তগুলি পূরণ করতে না-পারলে সরকার প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে। ৫. প্রতি সংস্থাকে পারফর্ম্যান্স অডিট করতে হবে। ৬. সংস্থা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পোশাক এবং গাড়িতে লোগো থাকতে হবে। ৭. গাড়িতে জিপিএস এবং ‘ফিজিক্যাল প্যানিক বাটন’ রাখা বাধ্যতামূলক। ৮. নিরাপত্তায় গাড়িতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি ও পুলিশের নির্দিষ্ট করে দেওয়া সময় পর্যন্ত তার ফুটেজ সংগ্রহে রাখতে হবে।
৯. সরকার অনুমোদিত নিরাপত্তা সংস্থাকে দিয়ে চালকের অতীত-জীবন খতিয়ে দেখতে হবে।
প্রশ্ন উঠেছে, হলুদ বা নীল-সাদা ট্যাক্সিতে সরকার এমন কড়াকড়ি করছে না কেন? পরিবহণ কর্তাদের দাবি, ‘‘হলুদ ও নীল-সাদা ট্যাক্সিতে নিয়মিত নজরদারির সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা অনেকটাই পরোক্ষে কাজ করে। হলুদ বা নীল-সাদা ট্যাক্সির ভাড়া সরকারই নিয়ন্ত্রণ করে। বেসরকারি ট্যাক্সির ভাড়ায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। যাত্রী-নিরাপত্তা, পরিষেবা নিশ্চিত করতেই সরকার এই শর্ত বেঁধে দিচ্ছে।’’
সরকারের একাংশের ধারণা, এর পিছনে রয়েছে শাসক দলের ইউনিয়নগুলির চাপ। যদিও পরিবহণ দফতরের দাবি, বেসরকারি ট্যাক্সিতে সরকারের সরাসরি নজরদারির সুযোগ বাড়াতেই বিধিনিষেধ আরোপের এই ভাবনা।
প্রাথমিক ভাবে সরকারের দেওয়া বেশির ভাগ শর্তের সঙ্গে সংস্থাগুলি একমত হয়েছে বলে দাবি পরিবহণ সচিবের। তবে আলাপনবাবুর কথায়, ‘‘সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে, প্রয়োজনে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পরেই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’ পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শর্তগুলি রাজ্যের সব কমিশনারেটে ও সরকারের বিভিন্ন মহলে মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে।
সরকারের বেঁধে দেওয়া শর্তের কয়েকটি নিয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলি বৈঠকে বিরোধিতা করেছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। মেরু ক্যাব ছাড়া বাকি সব সংস্থা সিসি ক্যামেরা লাগানোর ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করেছে।
মেরু ক্যাবের প্রতিনিধি সিদ্ধার্থ পওহার কথায়, ‘‘আমাদের আপত্তি নেই। তবে গাড়িতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি কতটা সফল ভাবে সম্ভব, তা দেখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy