কেউ চেয়েছিল ক্রিকেটের ব্যাট-বল, কারও আবার আবদার ছিল কথা বলা পুতুল। তার জন্য রথের মেলায় নয়, হাসপাতালেই ওদের হাতে তুলে দেওয়া হল পছন্দের খেলনা, বই। উল্টোরথের সকালে সেই সব পেয়ে কর্কট রোগ (ক্যানসার), থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কচিকাঁচাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠল একরাশ আনন্দ।
শনিবার সকালে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সভাগৃহে কর্কট রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ‘লাইফ বিয়ন্ড ক্যানসার’ প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল ‘ইচ্ছেপূরণ’ অনুষ্ঠান। এন আর এসের হেমাটোলজি বিভাগের পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েদিয়েছিলেন পরেশনাথ জৈন মন্দির কর্তৃপক্ষও। স্বেচ্ছাসেবী ওই সংস্থার ‘লাইফ বিয়ন্ড ক্যানসার’ প্রকল্পের চেয়ারম্যান পার্থ সরকার বললেন, ‘‘সকলের মিলিত স্পর্শে ওদের মুখে ফুটে ওঠা হাসিতেই আজকের উল্টোরথ উদ্যাপন করলাম।’’ এ হেন অনুষ্ঠানের সলতে পাকানোশুরু হয়েছিল এক মাস আগেই। শহরের ওই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে চিকিৎসা করাতে আসে কর্কট রোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বহু শিশু। তাদের সহযোগিতার জন্য হাসপাতালেই রয়েছে ‘লাইফ বিয়ন্ড ক্যানসার’ প্রকল্পের হেল্প ডেস্ক।
পার্থ জানাচ্ছেন, গত এক মাস ধরে এন আর এসের হেমাটোলজি ও পেডিয়াট্রিক অঙ্কোলজি বিভাগে ভর্তি এবং ডে-কেয়ারে আসা শিশুদের তালিকা তৈরি করেন হেল্প ডেস্কের কর্মীরা। উল্টোরথে তারা কীউপহার চায়, সেটা নিজের হাতে একটি কাগজে লিখে দিয়েছিল ১২০ জন শিশু। তা দেখে বই, কথা বলাপুতুল, ব্যাট, ফুটবল, ক্যারম বোর্ড-সহ বিভিন্ন উপহার কেনা হয়। হাসপাতালের সভাগৃহে উপস্থিত থেকে সেই উপহার নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরল, কেউ আবার চলে গেল নির্দিষ্ট চিকিৎসার ওয়ার্ডে।
শিশুদের ‘ইচ্ছেপূরণ’ করতে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক রামেন্দু হোমচৌধুরী, এন আর এসের অধ্যক্ষা ইন্দিরা দে, হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক তুফানকান্তি দলুই-সহ অন্য চিকিৎসকেরা। পার্থ জানান, তাঁদের প্রকল্পের মাধ্যমে দূরের জেলা থেকে শহরে চিকিৎসা করাতে আসা কর্কট রোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশু এবং তাদের পরিবারের এক জনের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, এন আর এসের পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএমেও চলছে এই প্রকল্প।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)