এ শহরে নামার সময়ে আকাশে যাতে বিমানকে কম অপেক্ষা করতে হয়, তার জন্য কলকাতায় ট্যাক্সি ওয়ে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র বুধবার বলেন, ‘‘এটা নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। তাই ট্যাক্সি ওয়ে সম্প্রসারণে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে।’’ আশা করা হচ্ছে, কিছু দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
সমস্যা ঠিক কোথায়?
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, টার্মিনালের সঙ্গে রানওয়ের সংযোগকারী প্রধান রাস্তা এই ট্যাক্সি ওয়ে। কলকাতা বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে এবং তার সমান্তরাল ট্যাক্সি ওয়ের মধ্যে দূরত্ব ১১৬ মিটার। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, এই দূরত্ব ন্যূনতম ১৮৩ মিটার হলে তবেই রানওয়ে এবং ট্যাক্সি ওয়ে একসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। কলকাতায় তা কম থাকার কারণে দ্বিতীয় রানওয়ে দিয়ে যখন বিমান ওঠা-নামা করছে, তখন বন্ধ রাখতে হচ্ছে ওই ট্যাক্সি ওয়ে ‘আলফা’। দ্বিতীয় রানওয়েতে বিমান যখন নামছে, তখন আলফা-য় ঢোকানো যাচ্ছে না কোনও বিমানকেই। ‘অ্যারাইভাল’ বিমান নেমে আসার পরে ‘ডিপারচার’ বিমান আলফায় ঢুকতে পারছে। আলফা পেরিয়ে সেই বিমান রানওয়ে পৌঁছতেও সময় নিচ্ছে। ফলে, দেরি হয়ে যাচ্ছে বিমান ছাড়তে।
পটনা থেকে কলকাতায় আসার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ইন্ডিগোর উড়ান শহরের আকাশে আধ ঘণ্টা চক্কর কাটায় কিছু দিন আগে বিস্তর হইচই হয়েছিল। সেটা ব্যতিক্রম নয়। এখন মাঝেমধ্যেই সকালে ও সন্ধ্যায় কলকাতায় নামার জন্য আকাশে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিমানকে।
কেন বিমানগুলির এই অপেক্ষা? বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এখন সপ্তাহে মূলত দু’দিন, বুধ ও শুক্রবার দিনভর প্রধান রানওয়েতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলায় দ্বিতীয় রানওয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে। ওই দু’দিনই শহরে নামার সময়ে আকাশে বাড়ছে যানজট। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের জিএম (এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট) বরুণকুমার সরকার বলেন, ‘‘দ্বিতীয় রানওয়ে এবং সমান্তরাল ট্যাক্সি ওয়ের দূরত্ব কম থাকার জন্য প্রধান রানওয়েতে ঘণ্টায় ৩০টি বিমান ওঠানামা করতে পারলেও দ্বিতীয়টিতে এক ঘণ্টায় ১৫-টির বেশি বিমান ওঠা-নামা করতে পারে না।’’ ফলে শহরের আকাশে এসেও অপেক্ষা করতে হয় অনেক বিমানকে।
বরুণবাবু জানান, এই সমস্যা সামলাতে ঠিক হয়েছে, আলফা ও দ্বিতীয় রানওয়ে থেকে অনেক দূরে সমান্তরাল আর একটি যে ‘ফক্স ট্রট’ ট্যাক্সি ওয়ে আছে, সেটিকেই দ্বিতীয় রানওয়ের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত বাড়ানো হবে। সে ক্ষেত্রে ডিপারচার বিমান একেবারে দ্বিতীয় রানওয়ের মুখে
গিয়ে অপেক্ষা করতে পারবে। অ্যারাইভাল বিমান নেমে আসার পরে সঙ্গে সঙ্গে রানওয়েতে ঢুকে সে উড়ে যেতে পারবে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্তাদের কথায়, ‘‘সারা বছরই কোনও না কোনও সময়ে বন্ধ রাখতে হয়
প্রধান রানওয়ে। আচমকা কোনও বিমান নেমে সেখানে আটকে যেতেও পারে। তখন দ্বিতীয় রানওয়েই একমাত্র ভরসা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy