ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর চেয়ারম্যান তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির কর্মসূচির জেরে ধর্মতলায় বিঘ্নিত হল স্বাভাবিক যান চলাচল। পুলিশি অনুমতি ছাড়াই বুধবার ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের কাছে ধর্নায় বসার চেষ্টা করেন নওশাদেরা। তাঁদের কর্মসূচির জেরে ধর্মতলায় যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি বুঝে জওহরলাল নেহরু রোড এবং পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল হয়ে ডোরিনামুখী গাড়িগুলিকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ওবিসি সংরক্ষণ-সহ বেশ কিছু দাবিতে বুধবার কলকাতার ধর্মতলায় প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল ‘কনস্টিটিউশন প্রোটেকশন ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। নওশাদের নেতৃত্বে ওই কর্মসূচিতে মূলত আইএসএফ কর্মী-সমর্থকেরাই উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা মেট্রো চ্যানেলের কাছে ধর্নায় বসার কথা ছিল তাঁদের। তবে পুলিশের থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিক্ষোভকারীরা সেখানে ত্রিপল টাঙানোর চেষ্টা করতেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় তাঁদের। ওই ধস্তাধস্তির সময়েই নওশাদকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র বলা চলে ধর্মতলাকে। দিনে ব্যস্ত সময়ে ধর্মতলায় এই কর্মসূচি ঘিরে যাতে সাধারণ মানুষের সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা জমায়েত শুরু করতেই সেখানে যানজটের উপক্রম হয়। দুপুর ৩টে নাগাদ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়ে দেয়, জমায়েতের জন্য জওহরলাল নেহরু রোড এবং পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুল হয়ে ডোরিনামুখী গাড়িগুলিকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ত্রিপল টাঙিয়ে বসার চেষ্টা করছিলেন বিক্ষোভকারীরা। ওই সময় পুলিশ তাদের সেখান থেকে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কেসি দাস মোড়ের সামনে থেকে পার্কস্ট্রিটের দিকে ধাওয়া করা হয় বিক্ষোভকারীদের। সেই সময়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন আইএসএফ সমর্থকেরা। নওশাদেরা সেই সময় ধর্নাস্থলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। আইএসএফ বিধায়কের অভিযোগ, এক পুলিশকর্মী তাঁকে ‘জোরে ঘুষি’ মেরেছেন।
আরও পড়ুন:
মোট চার দফা দাবিতে বুধবার দুপুরে মেট্রো চ্যানেলের কাছে ধর্নার ডাক দেওয়া হয়েছিল। ওয়াকফ সংশোধনী আইন বাতিল, ওবিসি সংরক্ষণ পুনর্বহাল এবং ভুয়ো তফসিলি জাতি ও জনজাতি শংসাপত্র বাতিল, বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষা, ভোটার তালিকার নিবিড় ও বিশেষ সংশোধনের নামে নাগরিকদের হেনস্থা বন্ধ করা— এই চার দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন নওশাদ এবং তাঁর সংগঠনের কর্মী-সমর্থকেরা। একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ কর্মসূচির ডাক দিলেও আইএসএফের কর্মী-সমর্থকেরাই সেখানে বেশি ছিলেন। বিক্ষোভকারীরা জোর করে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা।