ধৃত বরুণ মহেশ্বরী।—নিজস্ব চিত্র।
রেড রোডে গাড়ির ধাক্কায় যে বছর জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল, সেই বছরেই সেপ্টেম্বর মাসে গভীর রাতে হাজরা রোডে একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ ধাক্কা মারে একটি স্কুটারকে। স্কুটারের চালক অভিজিৎ পাণ্ডে গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান। গুরুতর আহত হন স্কুটারের বাকি দুই আরোহী। গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান চালক।
বুধবার রেড রোড-কাণ্ডের রায় ঘোষণা করবেন বিচারক। কিন্তু ওই মামলার সবে চার্জশিট জমা পড়ল মঙ্গলবার। দু’টি মামলার তদন্তের দায়িত্বেই ছিলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা।
রাতের ওই দুর্ঘটনার জেরে পরের দিন সকালে পণ্ডিতিয়া রোডের একটি অভিজাত আবাসনে তাণ্ডব চালায় পাশের বস্তির বাসিন্দারা। ওই বস্তিরই বাসিন্দা ছিলেন দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতরা। ঘাতক মার্সিডিজের ভিতর একটি চিরকূট খুঁজে পান স্থানীয় বাসিন্দারা যেখানে ওই অভিজাত আবাসনের ঠিকানা দেওয়া ছিল। সেখান থেকেই ক্ষুব্ধ জনতার ধারণা হয় ওই আবাসনেরই গাড়ি ওই মার্সিডিজটি। জনতার তাণ্ডবে আবাসনের প্রায় ৭৪টি গাড়ি ভাঙচুর হয়।
আরও পড়ুন: রেড রোড গাড়ি-কাণ্ডের রায় কাল, এক বছরে শেষ বিচার প্রক্রিয়া!
পরে তদন্তে জানা যায়, গাড়িটি গরচা রোডের বাসিন্দা কলকাতা শহরের নামী ব্যবসায়ী সুদর্শন মাহেশ্বরীর। তাঁর ছেলে বছর ২২-র বরুণ ওই রাতে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। ঘটনার তিনদিন পর বরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রথমে মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ ধারাতে (গাফিলতির জেরে অনিচ্ছাকৃত হত্যা)। পরে পুলিশ মামলাটি ৩০৪ ধারায় সংশোধন করার জন্য আদালতের অনুমতি চায়।
কিন্তু ঘটনার পর দীর্ঘ দিন কেটে গেলেও মামলার চার্জশিট কোনও অজ্ঞাত কারণে জমা করতে পারেনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার আলিপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। তবে তাঁরা ৩০৪এ ধারায় চার্জশিট জমা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, সেখানে তাঁরা উল্লেখ করেছেন যে গাড়িতে বরুণ ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
আরও পড়ুন: অসুস্থ বাবাকে নিয়ে রাতভর দৌড় সাব-ইনস্পেক্টরের, সরকারি বিমা শুনেই মুখ ফেরাল ৪ হাসপাতাল
যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা সেই সময় দাবি করেছিলেন গাড়িতে একজন মহিলা ছিলেন। গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, দুর্ঘটনায় আহতদের বয়ান তাঁরা রেকর্ড করেছেন। সেই বয়ান থেকে স্পষ্ট যে ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনাএবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে স্পষ্ট যে ওই রাতে ওই স্কুটার চালকরা হঠাৎ করেই ইউ টার্ন করায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি মার্সিডিজের চালক। সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। চালক মদ্যপান করেছিলেন সে রকম কোনও প্রমাণও মেলেনি বলে চার্জশিটে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু এই মামলার তদন্ত শেষ করতে এত দিন লাগল কেন তা নিয়ে যদিও মুখ খোলেননি গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy