Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Health

পুলিশ হাসপাতালে ডে-কেয়ারে পিজির কেমোথেরাপি পরিষেবা শুরু

পিজির রেডিয়োথেরাপি বিভাগে শয্যা ৫৮টি। ১৫ ও ২১ দিন অন্তর যাঁদের কেমোথেরাপি নিতে হয়, তাঁদের অঙ্কোলজি ও রেডিয়োথেরাপি বিভাগে ভর্তি হতে হত।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৭:১১
Share: Save:

শরীরে বাসা বাঁধা ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করতে এবং এর বিস্তার রুখতে কার্যকর কেমোথেরাপি। বহু রোগীর ক্ষেত্রেই সেই থেরাপির নির্দিষ্ট তারিখ পেরোলেও শয্যা মিলত না। ফলে, প্রতীক্ষারতদের তালিকাও দীর্ঘ হত। এ দিকে, কেমোথেরাপির শৃঙ্খল ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন ক্যানসার আক্রান্তেরা। সমস্যা দূর করতে পদক্ষেপ করেছে এসএসকেএম হাসপাতাল।

গত এপ্রিল থেকে পিজির অ্যানেক্স-৬, কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে চালু হয়েছে কেমোথেরাপির ডে-কেয়ার পরিষেবা। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩২টি শয্যায় দৈনিক ৫০ জন রোগীকে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পিজি-র রেডিয়োথেরাপি বিভাগের চিকিৎসকেরা। পুলিশ হাসপাতালের ওই ডে-কেয়ার কেন্দ্রে স্তন, ফুসফুস, হেড অ্যান্ড নেক, জরায়ু মুখের ক্যানসারের কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে।

পিজির রেডিয়োথেরাপি বিভাগে শয্যা রয়েছে ৫৮টি। ১৫ ও ২১ দিন অন্তর যাঁদের কেমোথেরাপি নিতে হয়, তাঁদের সকালে পিজিতে এসে অঙ্কোলজি ও রেডিয়োথেরাপি বিভাগে ভর্তি হতে হত। সকলেই যে শয্যা পেতেন, তেমনটা নয়। কারণ, ওয়ার্ডের সব শয্যাই ক্যানসারের রোগীতে ভর্তি থাকে। ফলে পরিষেবা না পেয়ে পরের তারিখের জন্য অপেক্ষা করতে হত। অনেক সময়ে আবার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর শয্যায় শুয়েও কেমোথেরাপি নিতে হত অন্য রোগীকে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সমস্যা হত প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহেও। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করলেও কেমোথেরাপি নিতে আসা রোগীরা দুপুরে খাবার পেতেন না। গোটা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেই পুলিশ হাসপাতালে ডে-কেয়ার পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন পিজি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পিজির অঙ্কোলজি ও রেডিয়োথেরাপি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অলোক ঘোষদস্তিদার বললেন, ‘‘কেমোথেরাপি দিয়ে সেই দিনই রোগীকে ছেড়ে দেওয়া যায়। অথচ, শুধু শয্যা না মেলায় সমস্যা হচ্ছিল। সময়ের যে নির্দিষ্ট ব্যবধানে কেমোথেরাপি নেওয়ার কথা, তা না হওয়ায় চিকিৎসার কার্যকারিতা কম হচ্ছিল। তাই এই পরিষেবা চালু হয়েছে।’’ অলোকবাবু জানাচ্ছেন, পুলিশ হাসপাতালে এসে ভর্তি হওয়ার পরে রোগীকে নির্দিষ্ট রঙের পোশাক দেওয়া হচ্ছে। কেমোথেরাপির জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, দুপুরের প্যাকেটবন্দি খাবার, সবই পাচ্ছেন রোগীরা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ার্ডে প্রশিক্ষিত নার্স এবং পিজির অঙ্কোলজি ও রেডিয়োথেরাপি বিভাগের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে সেখানে চলছে পরিষেবা। তিনি আরও জানাচ্ছেন, স্তন ও ফুসফুসের ক্যানসারের কেমোথেরাপিতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু হেড অ্যান্ড নেক বাজরায়ু মুখের ক্যানসারে সময় লাগে ৩-৪ ঘণ্টা। এই সময়ের হিসেবেই প্রতিদিন পুলিশ হাসপাতালের ৩২টি শয্যায় প্রায় জনা পঞ্চাশেক রোগী পরিষেবা পাচ্ছেন। তবে ওই রোগীদের সকলকে এ ক্ষেত্রে পিজির চিকিৎসাধীন হতে হবে।

এক বেসরকারি হাসপাতালের ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেমোথেরাপির শৃঙ্খল যেমন রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই যে ওয়ার্ডে সেই পরিষেবা দেওয়া হবে, সেখানকার পরিকাঠামোও ঠিক থাকা প্রয়োজন। সে দিক থেকে পিজি কর্তৃপক্ষ খুব ভাল পদক্ষেপ করেছেন। তবে পুলিশ হাসপাতালে কেমোথেরাপির দায়িত্বে যে নার্স ও চিকিৎসকেরা থাকবেন, তাঁদের সকলকেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health PG Hospital SSKM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE