Advertisement
E-Paper

হস্তান্তর নিয়ে বিতর্ক, আটকে সেতুর সংস্কার

ফুটপাথ এবড়ো খেবড়ো। সিঁড়ির ধার ক্ষয়ে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তৈরির পরে দীর্ঘ দিন কেটে গেলেও কোনও সার্বিক সংস্কার হয়নি। তাই চার দশকে এই অবস্থা হয়েছে চেতলা সেতুর। সংস্কারে এত ঢিলেমি কেন? চেতলা সেতু সংস্কারের দায়িত্ব নিয়ে একে অন্যের কোর্টে বল ঠেলছে কেআইটি আর কলকাতা পুরসভা। নির্মাণকারী সংস্থা কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-র দাবি, তৈরির পরে তারা এই সেতু হস্তান্তর করে দিয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০১
বিপজ্জনক যাতায়াত। ছবি: অরুণ লোধ।

বিপজ্জনক যাতায়াত। ছবি: অরুণ লোধ।

ফুটপাথ এবড়ো খেবড়ো। সিঁড়ির ধার ক্ষয়ে গিয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তৈরির পরে দীর্ঘ দিন কেটে গেলেও কোনও সার্বিক সংস্কার হয়নি। তাই চার দশকে এই অবস্থা হয়েছে চেতলা সেতুর। সংস্কারে এত ঢিলেমি কেন? চেতলা সেতু সংস্কারের দায়িত্ব নিয়ে একে অন্যের কোর্টে বল ঠেলছে কেআইটি আর কলকাতা পুরসভা। নির্মাণকারী সংস্থা কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)-র দাবি, তৈরির পরে তারা এই সেতু হস্তান্তর করে দিয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে। অথচ পুরসভার দাবি, সেতুর দায়িত্ব কখনই হস্তান্তর করেনি কেআইটি। ফলে কালীঘাট মন্দির, কেওড়াতলা শ্মশানের পাশে থাকা এই সেতুর ভবিষ্যৎ কার্যত ঝুলে রয়েছে।

সেতুর ফুটপাথের অজস্র তালি উঠে গিয়েছে। সিমেন্টের চামড়া উঠে গর্ত হয়ে গিয়েছে। এই বেহাল ফুটপাথে যাত্রীদের হোঁচট খাওয়া নিত্য দিনের ঘটনা। ফুটপাথ কোথাও রাস্তার সঙ্গে মিশে গিয়েছে। ফুটপাথের কোনও অংশ আবার রাস্তার থেকে নিচু। এমনকী সেতুতে ওঠার মুখে মৃতদেহ বহনকারী খাট বিক্রি হয় বিনা বাধায়। সংস্কারের অভাবে সিঁড়ির অবস্থাও তথৈবচ। চেতলা ব্রিজের একটি সিঁড়ি নেমে গিয়েছে হিউম রোডের দিকে। সেই দিকে কিছুটা এগিয়ে কালীঘাটের মন্দির। ফলে নিত্যযাত্রীর আনাগোনা লেগেই থাকে। অন্য সিঁড়িটি গোবিন্দ আঢ্যি রোডের দিকে। অপর সিঁড়িটি কেওড়াতলা শ্মশানের দিকে। দীর্ঘ অবহেলায় সিঁড়ির ধাপ বিপজ্জনক ভাবে ক্ষয়ে গিয়েছে। ফলে সামান্য অসতর্কতাতেই পা পিছলে যায়। কোথাও সিঁড়ির ধারে দু’একটি জায়গায় মানুষ গলে যাওয়ার মতো বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। সে দিকে নজর নেই পুরসভার। স্থানীয়েরাই বিপদ আটকাতে সেখানে বাঁশ পুঁতে রেখেছেন।

কেওড়াতলা শ্মশান থেকে শুরু হয়ে এই সেতু চেতলা রোডে মিশেছে। কেআইটি সূত্রে খবর, ১৯৭৪-এ সেতুটি তৈরি করে তারা। ১৯৭৬-এ কলকাতা পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়। অ্যাপ্রোচ রোড নিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৮০০ ফুট। চওড়ায় ৬০ ফুট।

গাড়ি চলাচলের যোগ্য দুই লেনের এই সেতুর উপর দিয়ে প্রতি দিন অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। সেতু থেকে চেতলা রোডে নেমে নিউআলিপুর ও তারাতলার দিকে যাওয়া যায়। অন্য দিক গিয়েছে কেওড়াতলা শ্মশান হয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে নিত্যযাত্রীরা জানান, মাঝেসাঝে রেলিং রং করা বা সেতুর রাস্তায় পিচ করা হলেও সার্বিক সংস্কার চোখে পড়েনি। সম্প্রতি আকাশি আর নীল রঙে সেজে উঠেছে সেতুর রেলিং। ওই পর্যন্তই সংস্কার। মানছেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) সুশান্ত ঘোষ। তাঁর কথায়, “ওটা কলকাতা পুরসভার অধীন নয়। তাই সংস্কার আমরা করতে পারি না। জরুরি পর্যায়ে রাস্তার পিচ অথবা ভাঙা রেলিং সারাই ও রং করতে পারি।” কলকাতা পুরসভার এই দাবি মানছে না কেআইটিএ। কেআইটিএ-এর এক আধিকারিক বলেন, “আইন অনুযায়ী, শুধুমাত্র কোনও কিছু তৈরি করার দায়িত্ব কেআইটি-র। কাজ শেষে কলকাতা পুরসভা তথা সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও ১৯৭৬-এ হস্তান্তর হয়েছিল।” অন্য দিকে, সুশান্তবাবুর মতই কলকাতা পুরসভার ডিজি (রাস্তা) সৌমিত্র ভট্টাচার্যের দাবি, “এই সেতু কখনই কলকাতা পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়নি। চেতলা সেতুর সার্বিক সংস্কার পুরসভার দায়িত্ব নয়।” ফলে চার দশক পরেও হস্তান্তর বিতর্কে আটকে থাকছে চেতলা সেতুর সংস্কার।

jayoti raha chetla bridge chetla renovation working stopped Chetla Bridge renovation kolkata news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy