Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দু’ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ভাসল শহর

এমনিতেই বর্ষায় শহরের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে পুরসভাকে। লাগাতার বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা আজ, সোমবার কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ), পূর্ত দফতর, এইচআরবিসি-সহ সব সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে।

 জল-দূষণ: ভাসছে মহাত্মা গাঁধী রোড। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ ও বিশ্বনাথ বণিক

 জল-দূষণ: ভাসছে মহাত্মা গাঁধী রোড। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ ও বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

দু’ঘণ্টায় কোথাও বৃষ্টি হল ৪৬ মিলিমিটার। কোথাও ৫৮ মিলিমিটার। আর তাতেই রবিবার দুপুরে রীতিমতো হাবুডুবু অবস্থা শহরের। উত্তরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে শুরু করে দক্ষিণে বালিগঞ্জ—সর্বত্র জল থইথই।

যদিও কলকাতা পুরসভার দাবি, জল বেশি ক্ষণ দাঁড়ায়নি। অলিগলি বাদ দিয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই শহরের মূল রাস্তা থেকে জল নেমে গিয়েছে। তবে ছুটি থাকায় যানজটের কবলে পড়তে না হলেও যাঁরা রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, তাঁদের ভোগান্তি হয়েছে। সপ্তাহের কাজের দিন হলে এ দিনের বৃষ্টিতে সেই ভোগান্তি আরও বাড়ত বলে মেনে নিয়েছেন পুর প্রশাসনেরই একাংশ। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পাম্প চালানো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু জল নামার সময় দিতে হবে। অনেক উড়ালপুলের নীচেও জল জমে রয়েছে। তার জন্যও যানবাহনের গতি স্বাভাবিক ভাবেই কমে যায়। এ দিন রাস্তা ফাঁকা থাকায় সেই সমস্যা হয়নি।’’

এমনিতেই বর্ষায় শহরের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে পুরসভাকে। লাগাতার বৃষ্টিতে রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে পুরসভা আজ, সোমবার কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ), পূর্ত দফতর, এইচআরবিসি-সহ সব সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে।

এ দিন বেশি বৃষ্টি হয়েছে বেলা ১২টা থেকে ২টোর মধ্যে। দু’ঘণ্টার ওই হঠাৎ বৃষ্টিতেই শহরের রাজপথ জলের তলায় চলে যায়। যদিও পুর প্রশাসনের একাংশ জানাচ্ছে, বৃষ্টির পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। কিন্তু দু’ঘণ্টায় ৫০ মিমি বৃষ্টি সব হিসেব ওলটপালট করে দেয়। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘দু’ঘণ্টায় ৫০ মিমি বৃষ্টি হলে জল তো জমবেই। কিন্তু তা দ্রুত নামানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল ৩টে পর্যন্ত শহরে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে বালিগঞ্জে, ৫৮ মিমি। প্রসঙ্গত, জুন মাসে ধারাবাহিক ভাবে বালিগঞ্জ-সহ দক্ষিণ কলকাতায় বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে আবহবিদদের একাংশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছিল যে, বালিগঞ্জই এ বার বৃষ্টি-সেরার শিরোপা পাবে কি না! যদিও পরে বৃষ্টিসেরা-সরণি থেকে কিছু দিনের জন্য বালিগঞ্জ সরে যায়। তার পরে এ দিন তার ফের ‘স্বমহিমায়’ প্রত্যাবর্তন। এ ছাড়া, এ দিন মানিকতলায় বৃষ্টি হয়েছে ৩০ মিমি, ধাপা লকে ৪৬ মিমি, পামার ব্রিজে ৫০ মিমি, ঠনঠনিয়ায় ৪৬ মিমি, উল্টোডাঙায় ২৯.৭২ মিমি, মোমিনপুরে ২৮ মিমি, চেতলায় ২৪ মিমি, যোধপুরে ২৭ মিমি ও কালীঘাটে ৩৫ মিমি।

সদর স্ট্রিটে জমা জলেই হুমড়ি খেয়ে পড়লেন পথচারী। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ ও বিশ্বনাথ বণিক

পাশাপাশি, বর্ষায় একাধিক রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পুর প্রশাসন। কোন রাস্তাগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সারাতে হবে, তার তালিকা কলকাতা পুলিশের তরফে পুরসভাকে দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ফলেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে নিয়ম মেনে চলতে নির্দেশিকা জারি করেছে পুর প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে আজ পুর ভবনে সরকারি, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের।

পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে বলেন, ‘‘যেখানে রাস্তা সারাইয়ের প্রয়োজন, সঙ্গে সঙ্গেই তা করা হচ্ছে। তবে বৃষ্টিতে পুরো রাস্তা সারাই সম্ভব হয় না। প্রয়োজনীয় মেরামতি করে দেওয়া হচ্ছে।’’

কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Rain Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE