একটি নেশার ঠেক ঘিরে দুই পাড়ার গোলমাল। তার জেরেই সোমবার রাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কামারহাটির আগরপাড়া স্টেশন রোড। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার মারামারিতে জখম হলেন প্রায় দশ জন। ভাঙচুর হল কিছু বাড়ি, দোকান ও গাড়িও। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালালে গণ্ডগোল আরও বাড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, স্টেশন রোডে একটি কারখানা ও গুদামের দু’পাশে প্রান্তিকনগর কলোনি এবং পাঞ্জা ভিলা কলোনি। অভিযোগ, রাত হলেই কারখানার গেটের সামনে নেশার ঠেক বসা নিয়ে দীর্ঘকাল অশান্তি চলছিল দুই পাড়ার। স্থানীয়দের আপত্তি বা কাউন্সিলর ব্যবস্থা নিলেও ঠেক বন্ধ করা যায়নি। সোমবার তা বড় আকার নেয়।
সূত্রপাত শনিবার রাতে। প্রান্তিক নগর কলোনির অভিযোগ, শনিবার রাতে ওই ঠেক বসানোর প্রতিবাদ করায় তাঁদের পাড়ার এক যুবককে মারধর করে পাঞ্জা ভিলার কয়েক জন যুবক। আর পাঞ্জাভিলার বাসিন্দা রাজু ঝা-র অভিযোগ, ‘‘প্রান্তিক নগরের কয়েক জন ছেলেই প্রতিদিন ওখানে নেশা করত। আমরা তার প্রতিবাদ করতাম। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ ওই কলোনির এক জন আমাদের হুমকি দেয়। তার প্রতিবাদ করাতেই ওরা হামলা চালায়।’’
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিমল সাহার মধ্যস্থতায় তখন গণ্ডগোল মিটলেও সোমবার ফের ঝামেলা বাধে। কারখানার সামনে পাঞ্জা ভিলার কয়েক জনের বসে থাকা নিয়ে বচসা। স্থানীয়েরা জানান, দু’পক্ষের প্রায় হাজারখানেক লোক বাঁশ, লাঠি নিয়ে মারামারি শুরু করেন। কাচের বোতল, পাথর ছোড়াছুড়ি, প্রান্তিক নগরের পাঁচটি বাড়ি এবং গাড়িতে চলে ভাঙচুর। ইতিমধ্যে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে গোলমাল আরও বাড়ে। রাত ২টোর পরে বিমলবাবুর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, ওই ঠেক বন্ধ করতে এত দিন প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি কেন? বিমলবাবুর দাবি, ‘‘কয়েক বার কয়েক জনকে ধরে পুলিশে দিয়েছি। ঠেকও ভেঙে দিয়েছি। কিছুতেই সমস্যা মিটছে না। পুলিশকে বলেছি কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওখানে টহল চলে। নেশা করতে দেখলেই ধরা হয়। ঘটনার পরে নজরদারি বেড়েছে।’’