Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রবীণদের জন্য পৃথক বিভাগ চালু করবে মেডিক্যাল

শীত পড়তেই হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় বছর পঁয়ষট্টির মহিলার। হাঁটুর যন্ত্রণায় পাশের ঘরেও যেতে পারেন না। অস্থি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়ে সাময়িক আরাম পেলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের কাবু হয়ে যান।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৯
Share: Save:

ছেলেমেয়েরা ভিন্ দেশে থাকেন। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ বাবাকে তাই বাড়িতে একাই থাকতে হয়। মাঝেমধ্যেই বুকে যন্ত্রণা অনুভব করেন তিনি। একাধিক চিকিৎসক পরীক্ষা করেও সমস্যা কোথায়, তা ধরতে পারেননি।

শীত পড়তেই হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় বছর পঁয়ষট্টির মহিলার। হাঁটুর যন্ত্রণায় পাশের ঘরেও যেতে পারেন না। অস্থি চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়ে সাময়িক আরাম পেলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের কাবু হয়ে যান।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ৬০ বছরের পরে সব অঙ্গে ক্ষয় শুরু হয়। ফলে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। কোনও একটি বিশেষ শাখার চিকিৎসকের পক্ষে যা চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অথচ প্রবীণদের এই সামগ্রিক চিকিৎসা যে শাখায় হয়, সেই জেরেন্টোলজি পরিষেবা কলকাতায় পর্যাপ্ত নেই। এ বার সেই সামগ্রিক পরিষেবাই চালু করছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সূত্রের খবর, কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ উদ্যোগে ওই হাসপাতালের ভিতরে নতুন বহুতল তৈরি হয়েছে। সেখানেই চালু হবে ৩০ শয্যার জেরেন্টোলজি বিভাগ। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতি শনিবার জেরেন্টোলজির বহির্বিভাগ চালু হয়েছে সেখানে। যাঁরা দেখাতে যাচ্ছেন, প্রয়োজনে তাঁদের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হচ্ছে। তবে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রাখার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

জেরেন্টোলজি বহির্বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক রাজা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘প্রবীণদের জন্য আলাদা বিভাগ হলে সামগ্রিক পরিষেবা দেওয়া যাবে। ওঁদের ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। আলাদা বিভাগ হলে গুরুত্ব দেওয়া যাবে।’’ হাসপাতালের এক কর্তা জানান, ভর্তি থাকা রোগীকে প্রয়োজনে একাধিক শাখার চিকিৎসকেরা দেখতে পারবেন। তা ছাড়া, বয়স্কদের মধ্যে অনেক সময়ে মানসিক অবসাদ তৈরি হয়। সে কারণেও নানা শারীরিক সমস্যা হয়। যার ধারাবাহিক চিকিৎসা প্রয়োজন। তাই রোগীদের ভর্তি করিয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা করা হবে। তা ছাড়া, বয়স্কদের নানা ধরনের থেরাপি ও প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজন হয়। এ জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী রাখারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। এ রাজ্যে জেরেন্টোলজির পর্যাপ্ত চিকিৎসক যে নেই, সে কথা মাথায় রেখেই স্বাস্থ্য ভবন নানা পরিকল্পনা করছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রশিক্ষিত কর্মীর বিষয় স্বাস্থ্য ভবনকে জানানো হয়েছে। পুরসভা ও সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমতি পাওয়া গেলে পরিষেবা চালু হবে। আশা করি, চলতি বছরেই এই পরিষেবা শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE