—প্রতীকী ছবি
করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি বাসমালিকদের দাবি মেনে কিছু সুবিধা দিলেও বাসের ভাড়া বাড়ানোর কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।
কিন্ত সীমিত যাত্রী নিয়ে চলার অজুহাতে বহু রুটেই বাড়তি ভাড়া আদায় শুরু হয় বলে অভিযোগ। লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো বন্ধ থাকায় যাত্রীদের একটি বড় অংশ সেই সময়ে বর্ধিত ভাড়া বাধ্য হয়ে মেনে নিলেও গোলমাল বাধছে এখন।
শহরতলির লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো সচল হওয়ার পরে বেসরকারি বাস, মিনিবাসে বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ ক্রমেই চড়ছে। একাধিক রুটে যাত্রী-বিক্ষোভের জেরে বাসের মালিকেরা ভাড়ার হার দু’-এক টাকা কমালেও সরকারি বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন রুটে বিভিন্ন হারে ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নজরদারি এড়িয়ে ওই ব্যবস্থা চলছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এমনকি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে সরকারি হস্তক্ষেপ কার্যত নেই বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে।
সম্প্রতি ভাড়া নিয়ে গোলমালের জেরে বন্ধ হয়ে যায় দক্ষিণ কলকাতার ১৪টি রুট। যার মধ্যে রয়েছে রামনগর থেকে মুকুন্দপুর, পালবাজার, নয়াবাদগামী বাসরুট। এ ছাড়াও বন্ধ হয়েছে পিকনিক গার্ডেন-বিচালিঘাট, বেলেঘাটা সেলস ট্যাক্স–বিচালিঘাট, হাওড়া স্টেশন–ভিআইপি বাজারগামী রুটের বাস। ওই সব বাস রুটগুলিতে যাত্রীদের কাছে ন্যূনতম সাত টাকার বদলে ৯-১০ টাকা চাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ৪৪, ৭১ এবং ৭২ নম্বর রুটেও। শুরুতে ওই সব রুটের বাসে উঠলেই ১০ টাকা চাওয়া হলেও এখন তা কমে আট টাকা হয়েছে। বি টি রোড এবং দক্ষিণেশ্বরগামী বিভিন্ন রুটে বাসে উঠলেই যাত্রীদের ১০ টাকা করে দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সল্টলেককেন্দ্রিক বাস রুটগুলিতে এবং দক্ষিণের ২৫৯, ১৩-সহ একাধিক রুটে বাসে উঠলেই যাত্রীদের ৯ টাকা করে দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বাসমালিক সংগঠনগুলি প্রকাশ্যে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার না করলেও তাদের অভিযোগ, লকডাউন পর্বে লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ১০ টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। রেল এবং মেট্রো সচল হলেও আগের মতো যাত্রী মিলছে না। এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘আগে যেখানে সারা দিনে বাসপিছু ৭৫০ যাত্রী মিলত, এখন সেখানে ৪০০ যাত্রী হচ্ছে। ফলে খরচে কুলিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। পরিষেবা সচল রাখতে গেলে যাত্রীভাড়া থেকে আয় বাড়ানো জরুরি। সরকার ব্যবস্থা না নিলে বাস পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়বে।’’
বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোনিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘সারা দিনে যা যাত্রী মিলছে, তাতে বাস চালানোর খরচ উঠছে না। যাত্রীদের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি এড়ানো কঠিন হচ্ছে।’’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিভিন্ন রুটে পরিদর্শক পাঠানো হচ্ছে। একাধিক বাস রুটকে সতর্ক করা হয়েছে। বাসমালিক সংগঠগনগুলির সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ তাঁর দাবি, যাত্রীসংখ্যা বিভিন্ন রুটে বাড়ছে। ফলে বিধি ভেঙে বর্ধিত ভাড়া আদায় বরদাস্ত করা হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy