Advertisement
E-Paper

আগে তপসিয়া চলুন, দেখে নেবো, হুঙ্কার উব‌্‌র চালকের

চালকের এক বক্তব্য, সকাল আটটা থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। এখন আর সম্ভব নয়। তাঁর বাড়ি তপসিয়ায়। তাই আমাদের পার্ক সার্কাসে নেমে যেতে হবে। তিনি বাড়ি চলে যাবেন। আমরা বললাম, এত রাতে গাড়ি পাওয়া সমস্যা। প্রশ্ন করলাম, ‘‘আপনি বুকিং নিলেন কেন তা হলে?’’

পায়েল মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৭ ০৩:০২
সেই চালক। নিজস্ব চিত্র

সেই চালক। নিজস্ব চিত্র

রাত প্রায় দশটা। বিরাটি থেকে ‘ক্যাব’ (উব্‌র) নিয়েছি। যাব টালিগঞ্জ। সঙ্গে আমার দাদা, বৌদি, তাঁদের পাঁচ বছরের মেয়ে ও এক বন্ধু। ক্যাবে উঠতেই অনুরোধের মোড়কে এল নির্দেশ — ‘‘দয়া করে পার্ক সার্কাসে গাড়ি খালি করে দেবেন।’’ সঙ্গের দাদা বলেন, ‘‘কেন দাদা? বুকিং তো টালিগঞ্জ পর্যন্ত। যাবেন না কেন?’’ চালকের এক বক্তব্য, সকাল আটটা থেকে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। এখন আর সম্ভব নয়। তাঁর বাড়ি তপসিয়ায়। তাই আমাদের পার্ক সার্কাসে নেমে যেতে হবে। তিনি বাড়ি চলে যাবেন। আমরা বললাম, এত রাতে গাড়ি পাওয়া সমস্যা। প্রশ্ন করলাম, ‘‘আপনি বুকিং নিলেন কেন তা হলে?’’ এ প্রশ্নের কোনও উত্তর এল না চালকের তরফে। তাঁর শুধু একটাই কথা, ‘‘এখনই গাড়ি থেকে নেমে যান।’’ বিরাটির একটা অচেনা গলিতে নেমে যেতে বলছেন তিনি। সঙ্গে মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে। আমাদের তখন দিশাহারা অবস্থা। অত রাতে উব্‌র পাব কোথায়? আমাদের সকলেরই বাড়ি অনেক দূরে। কখন পৌঁছব, তা ভেবেই পাচ্ছি না। তাই গাড়ি থেকে নামার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা বললাম, ‘‘বুকিং নিয়েছেন যখন, আপনাকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত পৌঁছে দিতেই হবে।’’ চালক কিছুতেই রাজি নন। বাধ্য হয়ে সঙ্গের দাদা বললেন, পার্ক সার্কাসে নামিয়ে দিলে টাকা দেওয়া হবে না। সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়ল চালকের দাঁত-নখ। ইকবাল নামে সেই চালক সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘টাকা দেবেন না মানে? তপসিয়ায় নিয়ে যাব। তার পরে দেখছি টাকা না দিয়ে কোথায় যান?’’ তখন আমার দাদা বললেন, ‘‘থানায় চলুন।’’ আরও বেড়ে গেল ইকবালের তর্জন-গর্জন। সোজা হুমকি দিলেন, ‘‘টাকা দেবেন না? থানা দেখাচ্ছেন? চলুন তপসিয়া। তার পরে দেখে নেব, কী হয়।’’ গাড়ির গতি এ বার এক ঝটকায় বেড়ে গেল। রাতের ফাঁকা রাস্তায় তখন হু হু করে ছুটছে গাড়ি। আর ভয়ে আমরা সিঁটিয়ে আছি। সঙ্গে বাচ্চা মেয়েটি অঝরে কাঁদছে। আমরাও সকলে আতঙ্কে কাঁপছি তখন। এতটাই দিশাহারা অবস্থা যে, ১০০ ডায়াল করার কথাও মাথায় আসেনি। চালক বলেই যাচ্ছিলেন, ‘‘এ বার গাড়ি একেবারে তপসিয়ায় থামবে। তার পরে দেখাচ্ছি।’’ ইতিমধ্যে পুলিশের ভ্যান দেখতে পেয়ে গাড়ি থামাতে বললাম। গাড়ি থামল না। চালকও ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। বাধ্য হয়ে একটু পরে চালককে বললাম আমাদের নামিয়ে দিন। গাড়ি থামল। একটি হলুদ ট্যাক্সিতে উঠে বাড়ি পৌঁছলাম সকলেই।

গোটা ঘটনার কথা মনে করে এখনও শিউরে উঠছি। বিষয়টা উব্‌রকে জানানোর জন্য কোনও হেল্পলাইন পাওয়া গেল না। অদ্ভুত ভাবে গাড়ির নম্বর ওই বুকিং-এ আসেনি। অর্থাৎ, অভিযোগ জানানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি তথ্যটাই দেয়নি সংস্থা। মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার পরেও যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কোনও ভাবনাই কি নেই সংস্থার! এই অভিজ্ঞতা জানিয়ে উব্‌রকে ই-মেল মারফত অভিযোগ জানিয়েছি। ফেসবুক পেজেও অভিযোগ জানিয়েছি। সংস্থার দায়সারা উত্তর— বিষয়টি তারা দেখছে। তবে গাড়ির নম্বর দেয়নি সংস্থা।

আরও পড়ুন: সাত ঘণ্টা জেরার মুখে সুলতান

Uber Driver Complaint উব্‌র Misbehave
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy