রাজ্যের একমাত্র সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মর্গ থেকে এক বন্দির দেহ উধাও হওয়ার পিছনে কর্মীদের গাফিলতি রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে এমনটাই মনে করছে পুলিশ। এ বার মর্গের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক এবং কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল তারা। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দফায় দফায় পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি, এসএসকেএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার ও মর্গের দায়িত্বে থাকা কর্মী-সহ বেশ কয়েক জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। বন্দির চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হাসপাতাল ও জেলের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে।
খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন হাওড়ার আমতার বাসিন্দা বাবলু পোল্লে। গত ২০ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর স্থান হয় ওই হাসপাতালের মর্গে। বাবলু পোল্লের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে ২৩ অক্টোবর হাসপাতালেই ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের সুরতহাল করার কথা ছিল কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ ডিভিশনের এক সহকারী নগরপালের। বাবলুর দেহ যে মর্গে নেই, সেই বিষয়টি সহকারী নগরপালই সামনে আনেন। পরে বন্দির পরিবার ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
যার ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু না করলেও তদন্ত শুরু করে। তাতেই জানা যায়, মহেশতলার বাসিন্দা অভিজিৎ মজুমদারের দেহের বদলে তাঁর পরিবারকে বাবলু পোল্লের দেহ দিয়েছেন মর্গের কর্মীরা। শুক্রবার অভিজিতের পরিবারের সদস্যেরা তাঁর দেহ শনাক্ত করলেও দেহ এখনই দেওয়া হবে না পরিবারকে। দেহের ডিএনএ পরীক্ষা করে মেলানো হবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ-র সঙ্গে। কারণ, ওই পরিবারই বাবলু পোল্লের দেহ শনাক্ত করে নিয়ে গিয়ে দাহ করে দিয়েছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, সাজাপ্রাপ্ত বন্দির দেহ উধাও হয়ে যাওয়ায় তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে তদন্তে সব দিকে লক্ষ রেখেই তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ জন্য হাসপাতাল ও জেলের একাধিক চিকিৎসক থেকে কর্মী-অফিসার, সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)