নভেম্বরের মাঝামাঝিতেও ডেঙ্গির দাপটে চিন্তায় কলকাতা পুরসভার চিকিৎসক, পতঙ্গবিদেরা। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে শহর কলকাতায় প্রায় এক হাজার জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সেই সংখ্যা খানিকটা কমে হয়েছিল সাড়ে আটশো। এ দিকে, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি গভীর নিম্নচাপের ফলে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা-সহ বঙ্গের একাধিক জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘কালীপুজোর মণ্ডপ দ্রুত না খুলে ফেললে বৃষ্টি হলে বিপদ। কারণ, বৃষ্টির জল মণ্ডপের উপরে জমে ডেঙ্গির বাহক এডিস ইজিপ্টাই-এর লার্ভার বংশবিস্তার করার সম্ভাবনা প্রবল।’’
পুজো মণ্ডপের বাঁশগুলি পুর স্বাস্থ্য দফতরের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরসভার এক পতঙ্গবিদের কথায়, ‘‘কালীপুজো মেটার পরপরই দ্রুত মণ্ডপ খোলার পাশাপাশি বাঁশ সরিয়ে গর্ত বুজিয়ে ফেলতে হবে। নচেৎ ওই গর্তে জল জমে মশার লার্ভা জন্মানোর সম্ভাবনা প্রবল।’’ পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেও দক্ষিণ কলকাতাতেই সর্বাধিক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েক মাসের মতোই সাত, আট, নয়, দশ, এগারো, বারো নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। দশ নম্বর বরো এলাকায় সমানে ডেঙ্গির দাপট দেখে বিস্মিত পুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। ওই বরো এলাকার ৯২, ৯৩, ৯৬, ৯৯ নম্বর ওয়ার্ড ভাবাচ্ছে পুরসভাকে। একই ভাবে, বারো নম্বর বরো এলাকার ১০২, ১০৬, ১০৭, ১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেও সংক্রমণ তেমন কিছু কমেনি। গত বছর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গিতে সর্বাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এ বার সেখানে মৃত্যু না হলেও আক্রান্তের সংখ্যা ভালই।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের অবশ্য দাবি, ‘‘আগের তুলনায় ডেঙ্গির লেখচিত্র নিম্নমুখী। ডিসেম্বর পড়লে সংক্রমণ আরও কমবে।’’ তবে শীতের মরসুমেও ডেঙ্গি সচেতনতায় প্রচার চালাবে পুর স্বাস্থ্য দফতর। এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি নির্মূল করতে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষের সচেতনতায় ডেঙ্গি ঠেকানো সম্ভব। তাই বছরভর পুরসভা সেই প্রচার চালাবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)