Advertisement
E-Paper

চাকরিতে প্রাক্তন ও বর্তমান পুরপ্রধানের ছেলেরা, বিতর্ক

গত সেপ্টেম্বরে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, চাকরি পাওয়া সাত জনের মধ্যে পুরপ্রধান এবং প্রাক্তন পুরপ্রধানের সন্তানের নাম রয়েছে জানার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয় সিপিএম।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১২
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

বাছাই পর্বের পরে ছিলেন চার হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী। ইন্টারভিউয়ে ডাক পেয়েছিলেন অন্তত ১৫০০ জন। তার মধ্যে উত্তর দমদম পুরসভায় করণিক পদে যে সাত জন চাকরি পেলেন তাঁদের মধ্যে মেধা তালিকার দুই এবং তিন নম্বর নাম নিয়ে উঠল প্রশ্ন। এক জন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান সুবোধ চক্রবর্তীর ছেলে সুমন চক্রবর্তী। আর এক জন প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণ করের ছেলে কুণাল কর। বস্তুত, ওই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলেছেন এক আইনজীবী। আদৌ মেধা তালিকা মেনে ওই নিয়োগ হয়েছে কি না, তথ্য জানার আইনে চিঠি দিয়ে তিনি তা পুর প্রশাসন ভবনের কাছে জানতে চেয়েছেন।

গত সেপ্টেম্বরে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, চাকরি পাওয়া সাত জনের মধ্যে পুরপ্রধান এবং প্রাক্তন পুরপ্রধানের সন্তানের নাম রয়েছে জানার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয় সিপিএম। তৃণমূলের অন্দরেও সমালোচনা শুরু হয়। এরই মধ্যে বিরাটির বাসিন্দা আইনজীবী বিপ্লব রায়চৌধুরীর চিঠিতে বিড়ম্বনা বেড়েছে। তাঁর কথায়, “পুরপ্রধান ও প্রাক্তন পুরপ্রধানের ছেলে চাকরি পেতেই পারেন। কিন্তু তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তির সন্তান চাকরি পেলে প্রশ্ন ওঠাও স্বাভাবিক। তাই তথ্য জানার আবেদন করেছি।’’

পুর প্রশাসন ভবনের এক কর্তা জানান, যোগ্য প্রার্থীর ক্ষেত্রে সম্পর্ক বাধা হতে পারে না। তবে বোর্ড অব কাউন্সিলরসের অনুমতি প্রয়োজন। চাকরির বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে প্রতি ধাপে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে। বাইরে থেকে পরীক্ষক আনা হয়েছিল। তিনি জানান, মৌখিক পরীক্ষার কমিটিতে পুরপ্রধান ছিলেন না। তিনি তৃণমূল কাউন্সিলর বিধান বিশ্বাসকে কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত করেন। যদিও বিধানবাবুর দাবি, তিনি যে মৌখিক কমিটির প্রধান তা তিনিই জানেন না!

উত্তর দমদমে ৩৪টির মধ্যে আটটি ওয়ার্ড সিপিএমের দখলে। এক বর্ষীয়ান সিপিএম কাউন্সিলর বলেন, ‘‘বোর্ড অব কাউন্সিলরসের মিটিংয়ে সাত জনের নাম নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি! চেয়ারম্যান এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যানের পুত্রেরা চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে সব জানা যায়। আইনের ফাঁক গলে স্বজনপোষণ করা হয়েছে।’’

উত্তর দমদমের সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘চেয়ারম্যানের হাতে অফিস। তিনি কাগজপত্র তৈরি করে দেখাতেই পারেন সব নিয়মমাফিক হয়েছে। কিন্তু ঘটনা হল, সবাইকে অন্ধকারে রেখে এই নিয়োগ হয়েছে। তৃণমূলের সব কাউন্সিলরেরা জানতেন কি না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, মনিটরিং কমিটির বৈঠকে নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে তৃণমূলের এক মহিলা কাউন্সিলর প্রশ্ন তোলেন। যার প্রেক্ষিতে পুরপ্রধান এবং প্রাক্তন পুরপ্রধানের কাছে কৈফিয়ত চান উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

পুরপ্রধান সুবোধ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বেআইনি কিছু হয়নি। মনিটরিং কমিটি কাগজপত্র খতিয়ে দেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁদের বিশেষ উদ্দেশ্যে রয়েছে।’’ প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণ করের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।

জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘উত্তর দমদমে তৃণমূলের বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও স্থানীয় সাংসদ সৌগত রায়কে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে।’’

Controversy Recruitment North Dum Dum Municipality TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy