Advertisement
E-Paper

জঞ্জাল ফেলায় ঝামেলা, বিতর্কে কাউন্সিলর

খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলার প্রতিবাদ করে তৃণমূল কাউন্সিলরের রোষে পড়তে হল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অভিযোগ, কাউন্সিলর বললেন, ‘আবর্জনা এখানেই ফেলা হবে। দেখি কে আটকায়!’

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৮ ০২:০৯
অপরিষ্কার: আবর্জনা ফেলার এই ভ্যাট ঘিরেই বিতর্ক। বৃহস্পতিবার, জগৎপুরে। নিজস্ব চিত্র

অপরিষ্কার: আবর্জনা ফেলার এই ভ্যাট ঘিরেই বিতর্ক। বৃহস্পতিবার, জগৎপুরে। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে খোলা জায়গায় আবর্জনা না ফেলার জন্য বাসিন্দাদের কাছে আর্জি জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভাগুলিকে দফায় দফায় বৈঠক করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা বলছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং জেলা প্রশাসন। অথচ উলটপুরাণ বিধাননগর পুরনিগমের জগৎপুরে। খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলার প্রতিবাদ করে তৃণমূল কাউন্সিলরের রোষে পড়তে হল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অভিযোগ, কাউন্সিলর বললেন, ‘আবর্জনা এখানেই ফেলা হবে। দেখি কে আটকায়!’

বুধবার সকালে বাগজোলা খাল সংলগ্ন জগৎপুরের রাস্তায় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাফাইকর্মীরা আবর্জনা ফেলতে গেলে আপত্তি জানান আদর্শপল্লি শিমুলতলার বাসিন্দারা। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ ওয়ার্ডের সাফাইকর্মীরা আবর্জনা ফেলতে গেলে রাস্তায় নেমে পড়েন বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও ভাবেই সেখানে জঞ্জাল ফেলা যাবে না। এ নিয়ে সাফাইকর্মীদের সঙ্গে বাসিন্দাদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সাফাইকর্মীদের দাবি, বাসিন্দাদের মধ্যে কয়েক জন উত্তেজিত হয়ে পুরনিগমের গাড়িতে লাথি মারেন। এর পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তৃণমূল কাউন্সিলর শিবনাথ ভান্ডারীও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, এক সময়ে কাউন্সিলর জানান, জঞ্জাল ওখানেই ফেলা হবে। কোনও আপত্তি তিনি শুনবেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা স্বপ্না দাস বলেন, ‘‘বাড়ির কাছে ভাগাড় তৈরি হলে কেউ মেনে নেবে! বৃদ্ধ শ্বশুরমশাই অসুস্থ। কটু গন্ধের জন্য ঘরে টিকতে পারছি না।’’ আর এক বাসিন্দা অরুণা বিশ্বাসের কথায়, ‘‘দুর্গন্ধের জন্য এই গরমে দরজা-জানলা বন্ধ করে রেখেছি। এ ভাবে বসবাস করা যায়!’’ স্থানীয় বাসিন্দা অশোক সাহা জানান, গত বছর ওই এলাকায় ডেঙ্গির দাপটে অনেকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। অশোকের কথায়, ‘‘খোলা জায়গায় জঞ্জাল না জমানোর জন্য রাজ্য সরকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তা হলে বাড়ির সামনে কেন ভ্যাট হবে?’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জঞ্জাল ১০ নম্বর সন্তোষপল্লির মাঠে ফেলা হত। ওই জায়গাটি এখন ঢিপিতে পরিণত হয়েছে। এখন মাঠ পরিষ্কারের কাজ চলছে। সে জন্য বিকল্প হিসেবে খালধারের রাস্তাকে আবর্জনা ফেলার জায়গা হিসেবে বেছেছেন কাউন্সিলর।

জনবসতিপূর্ণ এলাকায় যাতে একটিও ভ্যাট না থাকে, সে জন্য বারবার পুরসভাগুলিকে সতর্ক করছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির (সুডা) মাধ্যমে এর জন্য পুরসভাগুলিকে প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ করা হচ্ছে। এর পরেও পুরনিগমের কোনও ওয়ার্ডে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির প্রতিবাদে বাসিন্দাদের রাস্তায় নামতে হবে কেন? পুরনিগম গঠনের আড়াই বছর পরেও কি জঞ্জাল অপসারণের ন্যূনতম পরিকাঠামো গড়া গেল না?

এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে কাউন্সিলর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা যা জানিয়েছেন, তাতেও পরিকাঠামোর অভাবের বিষয়টিই উঠে এসেছে। তাঁদের বক্তব্য, সন্তোষপল্লির মাঠে বর্জ্য অপসারণের পরিকাঠামো গড়ার প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু যত দিন তা না হচ্ছে, ওয়ার্ডের জঞ্জাল তো কোথাও ফেলতে হবে। বাসিন্দারাই বা কেন পুরনিগমের গাড়িতে লাথি মারবেন? সন্তোষপল্লির ওই এলাকা ঘন জনবসতিপূর্ণ। গত বছর সেখানে ডেঙ্গি সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল। এক কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘আমাদের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো!’’

পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতে কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলব।’’

Garbage Vat Protest Councillor TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy