রানি বিড়লা গার্লস কলেজের অধ্যক্ষাকে অপসারণের ঘটনা রাজ্যে যে কোনও কলেজে অধ্যক্ষদের মর্যাদার সঙ্গে কাজ করার পক্ষে অশনি সঙ্কেত হিসাবেই দেখছে কোনও কোনও শিক্ষক সংগঠন। রাজ্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)-র সহ-সভাপতি প্রবোধকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘কলেজে চরম রাজনৈতিক দখলদারি চলছে,তার প্রমাণ রানি বিড়লা কলেজের ঘটনা। যেখানে পরিচালন সমিতি (জিবি) গঠনই করা হল না, সেখানে একতরফা ভাবে অধ্যক্ষাকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার সিদ্ধান্ত জিবি নিতে পারে না।’’
একই সঙ্গে, রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে গত সোমবারের নির্দেশে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা প্রীতি ঘাটানিকে রানি বিড়লা গার্লস কলেজের উপাধ্যক্ষ নিয়োগ করা হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন রয়েছে। সাধারণত, কলেজের অধ্যক্ষ বা পরিচালন সমিতির তরফে উপাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমোদন চাওয়া হয় বলে সূত্রের খবর।কিন্তু রানি বিড়লা গার্লস কলেজের ক্ষেত্রে কিসের ভিত্তিতে এবং কেন এই সিদ্ধান্ত নিল বিকাশ ভবন, তাস্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া মেলেনি।
পরিচালন সমিতির যে বৈঠকে অধ্যক্ষাকে নিলম্বিত করা হয়, তাতে শাসকদলের পুরপ্রতিনিধি কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়, সরকারি ও উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। অভিযোগ, বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়নি।তবে, জিবি-র সরকার মনোনীত সদস্যদের সূত্রে দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি কারা, সে-বিষয়ে রানি বিড়লার অধ্যক্ষা শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য তাঁদের জানাননি। জিবি-র সভানেত্রী কাজরী, সরকার মনোনীত সদস্য তথা নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি মানস কবি প্রমুখের সঙ্গে কিছু মতবিরোধের জেরে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শ্রাবন্তী। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু রায় দেওয়ার ঠিক আগে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ফের শুনানির সময় চান। মামলাটি বিচারপতিবিভাস পট্টনায়কের কাছে সরানো হয়। জিবি নিয়ে বিতর্ক এবং মামলার শুনানি চলাকালীন অধ্যক্ষাকে সরানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল উদ্বিগ্ন। আজ, সোমবার ফের হাই কোর্টে বিষয়টি উঠছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)