Advertisement
E-Paper

মায়ানমারের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় টার্মিনালে প্রৌঢ়

উড়ান ধরতে না পারার যে এতটা মূল্য চোকাতে হবে, তা বোধহয় বুঝতে পারেননি মায়ানমারের ৫০ বছরের টিন নে।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০২:৩০
কলকাতা বিমানবন্দরে বসে টিন নে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

কলকাতা বিমানবন্দরে বসে টিন নে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

উড়ান ধরতে পারেননি তিনি।

চুপ করে একটি ছোট ব্যাগ নিয়ে বসে রয়েছেন বিমানবন্দরের মেঝেতে। কারও ভাষা বুঝতে পারছেন না। তাঁর ভাষাও কেউ বুঝতে পারছেন না। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকছেন মুখের দিকে। শুধু পাসপোর্টটি এগিয়ে দিচ্ছেন।

উড়ান ধরতে না পারার যে এতটা মূল্য চোকাতে হবে, তা বোধহয় বুঝতে পারেননি মায়ানমারের ৫০ বছরের টিন নে। কলকাতা বিমানবন্দরের দোতলায় ‘ডিপারচার’ এলাকার ৩সি গেটের ভিতরের লাউঞ্জই এখন তাঁর ঠিকানা। চাইলেও দেশে ফিরতে পারবেন না। কারণ, সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ২০ মার্চ, শুক্রবার রাতে কলকাতা থেকে ইয়াঙ্গনের উড়ান ধরতে না পেরে টিন রয়ে গিয়েছেন বিমানবন্দরেই। তাঁর ধারকাছ দিয়ে যাচ্ছেন না কেউই। কারণ, করোনা আক্রমণ থেকে রেহাই পায়নি মায়ানমারও। সেখান থেকে এসেছেন টিন। সঙ্গে রয়েছে পাসপোর্ট, আর দিল্লি থেকে কলকাতা আর কলকাতা থেকে ইয়াঙ্গন যাওয়ার ইন্ডিগোর ২০ মার্চের বোর্ডিং পাস।

মাঝে মায়ানমার দূতাবাসের এক অফিসারের সঙ্গে তাঁকে ফোনে কথা বলিয়ে দিয়েছেন বিমানবন্দরে কর্মরত শ্রেয়ম ভাদুড়ী। পরে দূতাবাসের সেই অফিসার শ্রেয়মকে জানিয়েছেন, একটি দলের সঙ্গে মায়ানমার থেকে ভারতে আসেন টিন। তাঁরা সকলেই ইসলাম ধর্মাবলম্বী। গিয়েছিলেন অজমের শরিফে। শুক্রবার তাঁরা সবাই দিল্লি থেকে ইন্ডিগোর উড়ানে কলকাতায় আসেন রাত আটটা নাগাদ। কলকাতা থেকে ইয়াঙ্গনের উড়ান ছাড়ার কথা ছিল ৯টা ৫৫ মিনিটে। দিল্লি থেকে নামার পরে কলকাতায় মাঝের এই প্রায় দু’ঘণ্টার মধ্যে টিন যে কী করে তাঁর দলের থেকে ছিটকে গেলেন, তা অবশ্য কেউ বলতে পারছেন না।

সেই থেকে তিনি রয়েছেন কলকাতা বিমানবন্দরে। এই ৩সি গেটের ভিতরে লাউঞ্জে পরপর উড়ান সংস্থার টিকিট কাটার কাউন্টার। বাইরের যে কেউ এই লাউঞ্জে আসতে পারেন। সেই লাউঞ্জেই মাটিতে বসে রয়েছেন টিন।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে, এই অবস্থায় টিনকে তুলে নিয়ে গেলে নিয়মমাফিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে আদালতে হাজির করে জেলে পাঠাতে হবে। মুশকিল, টিনের ভাষা কেউ বুঝবেন না। তা ছাড়া কোন অপরাধে টিনকে গ্রেফতার করা হবে? উড়ান না ধরতে পারা তো কোনও অপরাধ নয়। তাঁর ভারতে থাকার ভিসা রয়েছে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত।

ইন্ডিগোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে, এর পরের উড়ানেই টিনকে ইয়াঙ্গন পাঠানো হবে। কিন্তু, সেই পরের উড়ান কবে উড়বে, তা কেউ বলতে পারছেন না। হাত তুলে দিয়েছে দূতাবাসও। সেখান থেকে জানা গিয়েছে, যদি ভিসা সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হত, দূতাবাস সাহায্য করতে পারত। কিন্তু, উড়ান ধরতে না পারলে কোনও সাহায্য করা মুশকিল।

এই অবস্থায় টিন কী করবেন, কোথায় যাবেন, তা কেউ জানেন না।

Kolkata Airport Myanmar Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy