Advertisement
E-Paper

করোনার থাবায় কলকাতায় প্রথম মৃত্যু সল্টলেকের হাসপাতালে

ওই ব্যক্তির বিদেশযাত্রার কোনও রেকর্ড নেই। তবে তিনি কোনও করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন বলে সন্দেহ চিকিৎসকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ১৬:১৪
শহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু। ছবি: পিটিআই।

শহরে প্রথম করোনা আক্রান্তের মৃত্যু। ছবি: পিটিআই।

নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় প্রথম মৃত্যু। সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল ৫৭ বছরের এক প্রৌঢ়ের। দমদমের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির বিদেশযাত্রার কোনও রেকর্ড নেই। গত ১৬ মার্চ জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার টিমের তত্ত্বাবধানে এক্সট্রাকর্পোরিয়েল মেমব্রেন অক্সিজেনেশনে (একমো) রাখা হয়েছিল তাঁকে। তার মধ্যেই সোমবার তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ দিন দুপুর ৩টে ৩৫ মিনিট নাগাদ সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই স্বাস্থ্যভবনকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২০ মার্চ তাঁর লালারসের নমুনা নাইসেডে পাঠানো হয়। তার পরদিন রিপোর্ট এলে দেখা যায়, তাঁর শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস রয়েছে। সেই থেকে সম্পূর্ণ আলাদা আইসোলেশন বেডে রেখে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা ছিল সেখানে। তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে বাঁচানো গেল না। তাঁর মৃত্যুর পর কী করণীয়, তা জানতে ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ দিন নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠক চলাকালীন এই মৃত্যুর খবর পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকে নির্দেশ দেন, যে ব্যক্তি মারা গিয়েছেন, তাঁর মৃতদেহ থেকে যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, সে দিকে নজর দিতে হবে। ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে গোটা প্রক্রিয়া যাতে সম্পন্ন হয়, তা সুনিশ্চিত করতে বলেন।

আরও পড়ুন: লকডাউনে নিয়ম ভাঙলে জেল, করোনা নিয়ে এ বার আরও কড়া সরকার​

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ের পরিজন এবং তাঁর পরিচিতদের মধ্যে কয়েকজনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের গৃহ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে তাঁর সংস্পর্শে ঠিক কত জন এসেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়াত ওই ব্যক্তির বিদেশযাত্রার কোনও রেকর্ড না থাকলেও, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে বিলাসপুর গিয়েছিলেন তিনি। ২ মার্চ পুণে-হাওড়া আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে চেপে কলকাতা ফেরেন। মহারাষ্ট্রের পুণেতেই যেহেতু করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাই রেলপথেও ওই ব্যক্তি সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিয়েবাড়িতেও কয়েক’শ মানুষের সংস্পর্শে আসেন তিনি। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ট্রেনে চেপে ফিরেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের সকলকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন: লকডাউন সত্ত্বেও ভিড় দোকান-বাজারে, পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার কার্ফু পঞ্জাব জুড়ে​

মৃত ব্যক্তি রেলের উচ্চপদস্থ কর্মী। কলকাতা ফিরে পাঁচ দিন অফিসও করেন তিনি। ১০ মার্চ অসুস্থ বোধ করার আগে জন্মদিন উপলক্ষে স্ত্রীর সঙ্গে নিউটাউনের একটি শপিংমলেও যান। সল্টেলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে দুই চিকিৎসক তাঁকে দেখেন। এক জন ল্যাব টেকনিশিয়ান বাড়িতে এসে রত্কের নমুনা নিয়ে যান। তার পর এক্সরে করাতে বাড়ির কাছের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারেও যান ওই ব্যক্তি। সেইসময় রিকশআচালক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক কর্মী তাঁর সংস্পর্শে আসেন। তাঁদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি ওই প্রৌঢের বাড়ির দুই পরিচারিকা এবং প্রতিবেশি এক বৃদ্ধ দম্পতিকেও পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

Coronavirus COVID-19 Salt Lake Health
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy