Advertisement
E-Paper

Kali Puja 2021: বিপদ বুঝেও ভিড় টানার প্রতিযোগিতা কালীপুজোয়

রবিবার দিনভর উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহরের কালীপুজোর প্রস্তুতি দেখে সেই আশঙ্কা বাড়তে বাধ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৩৩
দখল: রাস্তার উপরেই তৈরি হয়েছে কালীপুজোর মণ্ডপ। বেলেঘাটা মেন রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দখল: রাস্তার উপরেই তৈরি হয়েছে কালীপুজোর মণ্ডপ। বেলেঘাটা মেন রোডে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দুর্গাপুজোর পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। মাস্ক না পরে ঘুরে বেড়ানোর প্রবণতায় তা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। এর মধ্যেই কালীপুজোতেও রাতের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। যা দেখে চিকিৎসকদের বড় অংশের শঙ্কিত প্রশ্ন, আরও একটি উৎসবের বেলাগাম ভিড় বাড়তে থাকা সংক্রমণকে আরও ঊর্ধ্বমুখী করে তুলবে না তো?

রবিবার দিনভর উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহরের কালীপুজোর প্রস্তুতি দেখে সেই আশঙ্কা বাড়তে বাধ্য। মণ্ডপের অবস্থান ঠিক করতেই এখনও হিমশিম খাচ্ছে শহরের বেশির ভাগ গলিপথের কালীপুজোগুলি। রাস্তা আটকে পুজো করার পুরনো দাদাগিরিও বন্ধ নেই। কোন পথে পাড়ার লোকেরা যাতায়াত করবেন, কোন দিকে মুখ করে প্রতিমা বসালে ভাল ভাবে ভিড় এড়ানো যাবে— তা-ই ভেবে পাচ্ছেন না বেশ কয়েকটি বড় পুজোর উদ্যোক্তারা। মণ্ডপ দর্শক-শূন্য রাখতে হবে ধরে নিয়েই এগোনো হবে কি না, তা-ও ঠিক হয়নি বহু জায়গায়। অঞ্জলির ভিড় সামলানো হবে কী ভাবে, সেই প্রশ্নেরও উত্তর নেই।

যেমন সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের সব চেয়ে বড় মাথাব্যথা মণ্ডপের অবস্থান নিয়ে। পোশাকি নাম নব যুবক সঙ্ঘ হলেও বেশির ভাগ লোক এটি ফাটাকেষ্টর পুজো নামেই চেনেন। প্রতি বার কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট থেকে সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে ঢুকে এই পুজো দেখতে হয়। প্রতিমার মঞ্চ থেকে কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট পর্যন্ত গোটা রাস্তা ঢেকে তৈরি হয় মণ্ডপ। উঁচু করে মঞ্চ তৈরি করে তাতে প্রতিমা বসানো হয়। মঞ্চের নীচ দিয়ে দর্শনার্থীদের বেরোনোর পথ রাখা হয়। পুজোর কয়েক দিন ওই পথই ব্যবহার করেন পাড়ার বাসিন্দারা। এ বারও সে ভাবেই মণ্ডপের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু দর্শক-শূন্য রাখতে গিয়ে মণ্ডপের গেট বন্ধ করে দেওয়া হলে, স্থানীয়েরা যাতায়াত করবেন কোন পথে? পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা প্রবন্ধ রায় বললেন, ‘‘কী ভাবে কী করব এখনও জানি না। তবে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই নিতে হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘জলসা বা বসে ভোগ খাওয়ানো বন্ধ করে দেওয়া হলেও চিন্তা যাচ্ছে না। প্রতিমার জন্য জমা পড়া হাজার হাজার মালা বা অঞ্জলি দিতে ভিড় করা লোকেদের নিয়েই সমস্যা। কোন পথে হাঁটব জানি না।’’

সোমেন মিত্রের (ছোড়দা) পুজো নামে পরিচিত আমহার্স্ট স্ট্রিট সাধারণ শ্রীশ্রী কালীপুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের আবার চিন্তা মণ্ডপের বাইরের ভিড় নিয়ে। ওই পুজোর অশীতিপর উদ্যোক্তা বাদল ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘দুর্গাপুজোয় এই মণ্ডপের বাইরের ভিড়ই ভুগিয়েছে। করোনা কী করতে পারে, আমরা দেখেছি। সোমেনের মৃত্যুর পরে স্মৃতিটুকু ধরে রাখার জন্য পুজোটা করা। সকলকে অনুরোধ, অযথা ভিড় করবেন না। বেঁচে থাকলে আগামী দিনে অনেক পুজো দেখতে পাবেন।’’

এই বক্তব্যে অবশ্য মন নেই চেতলা প্রদীপ সঙ্ঘ, খিদিরপুর সর্বশ্রী সঙ্ঘ বা হরিদেবপুর নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবের মতো বহু পুজো কমিটির। জৌলুস কমানোর বদলে নিজের নিজের মতো করে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা। টালিগঞ্জের মুর অ্যাভিনিউয়ের রসা শক্তি সেবক সঙ্ঘের এক পুজো কর্তার আবার দাবি, ‘‘এই বছরটা আনন্দের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। সারা বছর করোনা নিয়ে বসে থাকার পর কেউ কোনও বিধিনিষেধ শুনবেন না। তা ছাড়া, কালীপুজো সংখ্যা এত বেশি যে, পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে পুলিশের পক্ষে সব দিকে নজর রাখাও সম্ভব নয়।’’

উত্তর কলকাতায় আবার এক মন্ত্রীর বাড়ির সামনে রাস্তা আটকে বিশাল মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বাগমারি সর্বজনীন কালীপুজো কমিটির। এ বছর তাদের শতবর্ষ। এত আড়ম্বরে মানুষের ভিড় বাড়বে না তো? পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কিশোর ঘোষ বললেন, ‘‘করোনার ভয়ে কি সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া যায়? যতই হোক ১০০তম বছর!’’

Kali Puja 2021 Coronavirus in Kolkata COVID19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy