E-Paper

পাল্টা মামলায় ক্ষিপ্ত কোর্ট, জরিমানার মুখে পুরপ্রতিনিধি 

পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টিতে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব ভাঙার জন্য পুর প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট। সেই ক্লাবের সভাপতি জয়দেব।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:০৫
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

ফের উচ্চ আদালতের তোপের মুখে পড়লেন বিধাননগর পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্কর। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বেআইনি ক্লাব ভাঙার কাজ ঠেকাতে গিয়ে ক্লাবের সভাপতি জয়দেব ও সম্পাদক তরুণ মণ্ডল এক লক্ষ টাকা জরিমানার সম্মুখীন হয়েছেন।

পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপট্টিতে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব ভাঙার জন্য পুর প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট। সেই ক্লাবের সভাপতি জয়দেব। নির্দেশ কার্যকর না করায় নিজেদের জমির মালিক বলে দাবি করা একটি পরিবার পুর কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে।

সেই মামলায় দেওয়া নির্দেশেই পুরসভা সম্প্রতি ক্লাবটি ভাঙতে শুরু করে। তখন ক্লাবের তরফে আদালত অবমাননার মামলার মধ্যেই হাই কোর্টে ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন দাখিল করেন জয়দেবরা। তাতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে জানানো হয়, ক্লাব যে জমির উপরে, সেটি সরকার অধিগৃহীত কি না, তা যাচাই না করেই পুরসভা ভাঙার কাজ শুরু করে ঠিক করেনি। এতেই ক্লাবের সভাপতি জয়দেব নস্কর ও সম্পাদকের উপরে চটে গিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিংহ ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন খারিজ করেন এবং ক্লাবকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে আবেদনকারী তথা জয়দেবদের এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করেন।

উল্লেখ্য, ওই ক্লাব নিয়ে কয়েক বছর আগেই নয়াপট্টির বাসিন্দা প্রামাণিক পরিবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ক্লাবটি তাদের জমি জবরদখল করে তৈরি হয়েছিল বলে আদালতে জানায় পরিবারটি। হাই কোর্টের নির্দেশে বিধাননগর পুরসভা দেখে, ক্লাবের বৈধ নকশা নেই। তাই পুরসভা সেটি অবৈধ ঘোষণা করে ভাঙার নির্দেশ দেয়।

সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ক্লাবের সভাপতি জয়দেব ও সম্পাদক হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। দু’জায়গাতেই তাঁরা হেরে যান। দুই আদালতই পুরসভার সিদ্ধান্ত বহাল রেখে জয়দেবদের মামলা খারিজ করে। পুরসভা ও পুলিশ ক্লাব ভাঙতে গিয়ে দু’বার বাধার সম্মুখীন হয়ে ফিরে যায়।

ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন খারিজ করার রায়ে বিচারপতি সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। একটি মামলা দুই আদালতে খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন দাখিল করা হয়েছে দেখে বিস্মিত হন বিচারপতি। যা আবেদনকারীদের ‘বেপরোয়া মনোভাব’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কোনও নকশা ছাড়াই ক্লাবটির নির্মাণ হওয়ায় সেটি বেআইনি বলে উল্লেখ করে বিচারপতি সিংহ জানান, সামান্যতম ছাড় দিলে এই ক্লাব ভাঙার কাজ শেষ হবে না। তিনি জানান, যাঁরা বাহুবল দেখিয়ে বেআইনি নির্মাণ করেন, এমন নীতিহীন বেআইনি নির্মাণকারীদের রেয়াত করা হবে না।

কেন ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন দাখিল করলেন? জয়দেবের দাবি, ‘‘আইনি পরামর্শ নিয়েই দাখিল করা হয়েছিল। আমরা তো আইনের কিছু জানি না। আদালতের নির্দেশ মানতে বাধা দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের বুঝিয়েছিলাম, ক্লাব ভাঙায় যেন কেউ বাধা না দেন। তবে আদালতের নির্দেশের পরে আর ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলাম না।’’

আগামী ১৮ এপ্রিলের মধ্যে জরিমানার টাকা দেওয়া হয়েছে কি না এবং ক্লাব সম্পূর্ণ ভাঙা হয়েছে কি না, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Bidhannagar municipality Municipal Councilor

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy