Advertisement
E-Paper

সিপি-র নির্দেশে শহরের ছেঁড়া তার সাফ পুলিশের

সিপির নির্দেশের পরেই শহরের প্রায় সব থানার ওসিরা নেমে পড়েন রাস্তা তার-মুক্ত করতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০১:৫৮
বিপজ্জনক: পুলিশ কাজ শুরু করলেও এখনও শহরের বেশ কিছু জায়গায় পড়ে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে ছিঁড়ে যাওয়া তার। শুক্রবার, কসবার রাজডাঙায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

বিপজ্জনক: পুলিশ কাজ শুরু করলেও এখনও শহরের বেশ কিছু জায়গায় পড়ে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে ছিঁড়ে যাওয়া তার। শুক্রবার, কসবার রাজডাঙায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আমপানে শহরে যে ক’জনের মৃত্যু হয়েছিল, তার বেশির ভাগই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা বলে পুলিশ জানিয়েছিল। তবু ঝড়ের ন’দিন পরেও শহরের রাস্তা ছেঁড়া তারের জটমুক্ত হয়নি বলে অভিযোগ উঠছিল। কোথাও সেগুলি বিপজ্জনক ভাবে রাস্তার মধ্যে ঝুলছে। কোথাও বিপদ কয়েক গুণ বাড়িয়ে সেগুলি ডুবে গিয়েছিল গত বুধবারের কালবৈশাখীর পরে জমা জলে! বহু জায়গায় আবার ভেঙে পড়া গাছ সরানো হলেও রয়ে গিয়েছিল ছিঁড়ে পড়া তার।

তার সরানো নিয়ে পুরসভার সঙ্গে সিইএসসি বা কেব্‌ল সংস্থাগুলির দায় ঠেলাঠেলি চললেও কড়া অবস্থান নিল কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার সকালেই সমস্ত থানাকে বিকেলের মধ্যে নিজের এলাকার সব ছেঁড়া তার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। তিনি এ দিন বলেন, “সব থানার ওসিদের বলেছি, দ্রুত শহরের সমস্ত ছেঁড়া তার সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে। কেব্‌ল সংস্থার আধিকারিকদের দ্রুত এ কাজ করে ফেলা উচিত ছিল। তাঁদেরও জানাতে বলেছি।”

সিপির নির্দেশের পরেই শহরের প্রায় সব থানার ওসিরা নেমে পড়েন রাস্তা তার-মুক্ত করতে। কিন্তু ডিসি (সাউথ)-র অধীন এক থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ঝড়ের আগে মানুষকে সরাতে হল। পরে গাছ কাটতে হল। এ বার তারও সরাতে হচ্ছে। যাঁদের যে কাজ করার কথা, তাঁরা তা করবেন না কেন? বাহিনীতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে, তাতে কত দিন টানা যাবে জানি না।” লালবাজারের যদিও দাবি, কমিশনারের নির্দেশের পরে শুক্রবার রাতের মধ্যে শহরের শ্রী ফিরেছে অনেকটাই। বাকি এলাকায় শনিবার দুপুরের মধ্যে তার সরিয়ে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক আধিকারিক।

ছেঁড়া তারের জট থেকে শহরকে মুক্ত করতে এত দিন লেগে গেল কেন? কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অতীন ঘোষ বললেন, “গাছ কাটতে কিছুটা সময় লেগে গিয়েছে। সিইএসসি নিজেদের কাজ অনেকটাই করেছে। বাকি তার তো কেব্‌ল সংস্থাগুলির সরিয়ে নেওয়ার কথা। আগেও বহুবার ওদের বলে কাজ হয়নি। এমনকি, মাটির নীচ দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে গেলেও কেব্‌ল মালিকদের তরফে সে ভাবে উদ্যোগ দেখা যায়নি।” প্রসঙ্গত, মেয়র থাকাকালীন শোভন চট্টোপাধ্যায় শহরের দৃশ্যদূষণ ঠেকাতে এবং একের পর এক মৃত্যু রোধে সমস্ত কেব্‌ল ও বিদ্যুতের তার মাটির নীচ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান। ২০১৫ সালে এ নিয়ে সব পক্ষের মধ্যে বিস্তর আলোচনা হলেও কাজের কাজ হয়নি। বর্তমানে পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম মেয়র থাকাকালীনও আলিপুরের কাছে এ নিয়ে কাজ করার শুধু পরিকল্পনাই হয়েছে। কাজ শুরু হয়নি। ফিরহাদ অবশ্য ঝড়ের পরেই বলেছিলেন, “যাঁদের সরানোর কথা তাঁরা না সরালে আমরাই ওই সব তার কেটে দেব।”

সেই কাজই কি এ বার পুলিশ করল?

শহরের এক কেব্‌ল সংস্থার অধিকর্তা সুরেশ শেঠিয়া যদিও অভিযোগ উড়িয়ে রাতে বলেন, “ঝড়ের পরের দিনই পুর চেয়ারম্যান আমাদের ডেকে তার সরিয়ে নিতে বলেছিলেন। আমরা যতটা পেরেছি করেছি। মাটির নীচ দিয়ে অপটিক্যাল লাইন নিয়ে যাওয়া খুবই খরচসাপেক্ষ। সরকারই সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট দিক নির্দেশ করতে পারেনি। আট-দশ দিনের মধ্যে সকলে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। কিন্তু এ ভাবে তার সরাতে গিয়ে নতুন করে লাগানো তারও পুলিশ কেটে দিয়ে থাকলে গ্রাহক সমস্যায় পড়বেন।” কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার স্পষ্ট বক্তব্য, “জীবনের মূল্য সবার আগে। দ্রুত সতর্ক না হলে প্রয়োজনে জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে ধরে নিয়ে যথোপযুক্ত ধারা দিয়ে মামলাও করা হবে।”

Cyclone Amphan Cyclone Anuj Sharma
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy