অপরাধ দমন কৌশল শিখতে উন্নত দেশে প্রশিক্ষণে পাঠানো হয় পুলিশ অফিসারদের। এ বার পরিচ্ছন্নতার পাঠ শেখাতে নিচুতলার অফিসারদের ভারতের তুলনায় আর্থসামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা দেশে পাঠাতে চায় লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে এক পদস্থ পুলিশকর্তাকে বাছাই করা নামের তালিকা তৈরি করতে বলেছেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।
শুক্রবার দক্ষিণ বন্দর থানার নতুন ভবন উদ্বোধনে গিয়ে সিপি পরিচ্ছন্নতার প্রসঙ্গ তোলেন। ভারতের থেকে আর্থসামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা দেশেও সরকারি অফিস সাফ থাকে, তা উল্লেখ করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলে নিজেরাও ভাল থাকবেন। কাজে উৎসাহ পাবেন।’’ অফিসার থেকে কর্মী সকলকে নিজের হাতে থানা সাফ রাখারও নির্দেশ দেন তিনি।
অনেক পুলিশকর্তা মানছেন, বহু থানা অপরিচ্ছন্ন রয়েছে। কোথাও মেঝেতে ধুলো, দেওয়ালে ছোপ, কোথাও সিঁড়ির তলায়, ঘরের কোণে ডাস্টবিন, কাগজের স্তূপ! থানা পরিষ্কার রাখতে পুলিশের নিযুক্ত সাফাইকর্মী থাকলেও তার সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় থানা অপরিষ্কার থেকে যায়। কখনও অফিসারেরা নিজেরা লোক জোগাড় করে থানা সাফ করিয়ে নেন। তবে সব ক্ষেত্রে কাজের লোকও মেলে না।
দক্ষিণ বন্দর থানায় উপস্থিত এক পুলিশকর্তা জানান, এই নির্ভরশীলতার রেওয়াজও বদলাতে চান সিপি। ‘‘সিপির নির্দেশ, যে ভাবে নিজের বাড়ি সাফ রাখেন, সে ভাবে থানাও পরিষ্কার রাখুন। বাড়ি থেকে বেরোবার সময় আলো-পাখা বন্ধ করেন, কেন থানাতে তা হবে না?’’ বলেন ওই কর্তা।
লালবাজারের কেউ কেউ বলছেন, বহু থানার ওসি, অতিরিক্ত ওসি কার্যত ‘বাবু’ হয়ে থাকেন। সাফ করা তো দূর, এক গ্লাস জলও গড়িয়ে খেতে চান না। ব্যারাকগুলির পরিচ্ছন্নতাতেও নজর দেওয়া হয় না। ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার মরসুমে আকছার অসুস্থ হয়ে পড়েন হয় নিচুতলার কর্মী-অফিসারেরা। অথচ সিবিআইয়ের মতো বহু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাঝারি মাপের অফিসারদের নিজেদেরই কাজ করতে হয়। ‘‘প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু হওয়ার পরে পরিচ্ছন্নতার কাজ বেড়েছে। নিচুতলার কর্মীরা সাফাই ঠিক মতো করছেন কি না, তাও তদারকি করতে হয়,’’ বলছেন এক কেন্দ্রীয় সরকারি কর্তা।
সিপি-র দাওয়াই মেনে এ বার শহরের থানাগুলিও স্বচ্ছ হয় কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy