Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Tramline

Tram Service: পাল্টানো হয়নি ঝড়ে ছেঁড়া তার, দু’বছর বন্ধ ৩৬ নম্বর ট্রাম

এ শহরে ট্রামের অস্তিত্ব আপাতত বাঁচিয়ে রাখছে দক্ষিণের দু’টি রুট— টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়াহাট এবং এসপ্লানেড থেকে বালিগঞ্জ।

নিষ্ফল: খিদিরপুর-এসপ্লানেড রুট খুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল কাজ। তবে তা বন্ধ হয়ে যায় মাঝপথেই। নিজস্ব চিত্র

নিষ্ফল: খিদিরপুর-এসপ্লানেড রুট খুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে শুরু হয়েছিল কাজ। তবে তা বন্ধ হয়ে যায় মাঝপথেই। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৭
Share: Save:

সাবেক কলকাতার বৈশিষ্ট্য বহনকারী ট্রাম অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল। যদিও সেটা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য। ট্রামপ্রেমীদের আশঙ্কা, দীর্ঘ দিনের জন্য এমন হতে চলেছে। উত্তর কলকাতাকেন্দ্রিক ট্রামকে জিইয়ে রেখেছিল ধর্মতলা থেকে লেনিন সরণি, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট হয়ে শ্যামবাজারগামী একমাত্র রুটটি। সম্প্রতি মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেই রুট। ফলে, উত্তরে ট্রামের ঢং ঢং ধ্বনি এখন অতীত।

এ শহরে ট্রামের অস্তিত্ব আপাতত বাঁচিয়ে রাখছে দক্ষিণের দু’টি রুট— টালিগঞ্জ থেকে গড়িয়াহাট এবং এসপ্লানেড থেকে বালিগঞ্জ। ঘূর্ণিঝড় আমপানে ক্ষতি হয়েছিল খিদিরপুর-এসপ্লানেড রুটের ওভারহেড তার এবং বৈদ্যুতিক স্তম্ভের। দু’বছর হতে চললেও এখনও চালু হয়নি সেই লাভজনক রুট। মাস দুয়েক আগে কাজ শুরু হলেও তা ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খিদিরপুর ডিপোর কাছে ছিঁড়ে যাওয়া ওভারহেড কেব্‌ল এখনও বদল করতে পারেনি ট্রাম সংস্থা। অভিযোগ, পরিকল্পনা খাতে প্রাপ্য অর্থ না পাওয়ায় ওই কাজ করা যাচ্ছে না। সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরে ওই টাকা আসতে পারে। তার পরেই কাজ শুরু হবে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৈদ্যুতিক ট্রামের রুটগুলির অন্যতম প্রাচীন এসপ্লানেড-খিদিরপুর-টালিগঞ্জের ৩৬ নম্বর রুটটি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের প্রেক্ষাপটে লেন্সে বার বার ধরা পড়েছে ওই ট্রাম। শুধু ময়দানের কারণেই নয়, খিদিরপুরের বাসিন্দাদের অনেকেই ছিলেন ওই রুটের নিত্যযাত্রী। দৈনিক ছ’থেকে সাত হাজার যাত্রীর ভিড় হত রুটে।

এখন প্রতি সন্ধ্যায় সরকারি-বেসরকারি বাস কমে গেলে ফেরার জন্য অনেককেই নির্ভর করতে হয় শাটল ট্যাক্সির উপরে। ওই ট্রাম রুট চালুর দাবিতে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি খিদিরপুর ডিপোর সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’। এ ছাড়াও একাধিক পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের মিলিত বিক্ষোভের পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই রুট সচল করার কাজ শুরু হয়। বিদ্যুতের স্তম্ভ মেরামতি ছাড়াও ময়দান এলাকায় ট্রামলাইন পরিষ্কার করাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, কিছু দিন যেতে না যেতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাজ।

এই প্রসঙ্গে ট্রাম কোম্পানির এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘প্রয়োজনীয় মেরামতির জন্য পরিকল্পনা খাতে যে টাকা পাওয়া যায়, তা না পাওয়ায় কেব্ল কেনার বরাত দেওয়া যায়নি।’’ এই নিয়ে ফের আন্দোলনে নামতে চলেছে ট্রামপ্রেমীদের সংগঠন। আগামী ২৪ এপ্রিল পথে নামতে পারেন তাঁরা। সংগঠনের অভিযোগ, স্বল্প খরচের পরিবেশবান্ধব যান হওয়া সত্ত্বেও ট্রাম ক্রমে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে শহরে। পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বহু রুটে যানজটের অজুহাতে ট্রাম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির এই সময়ে ট্রামই বড় সুরাহা হতে পারত বলে দাবি সংগঠনের সদস্যদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tramline Tram Ride
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE