নির্মীয়মাণ সেই স্কাইওয়াক। ফাইল চিত্র
কথা ছিল, কালীপুজোয় চালু হবে। হয়নি। এ বার জানা গেল, কল্পতরু উৎসবের আগেও দর্শনার্থীদের জন্য স্কাইওয়াক পুরোদস্তুর চালু করা সম্ভব হবে না। পুরমন্ত্রীকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলি। শনিবার দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াকের কাজের অগ্রগতি
খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘কল্পতরুতে পরীক্ষামূলক ভাবে স্কাইওয়াক চালু করা হবে। তবে, পুরোপুরি চালু করতে মার্চ পর্যন্ত সময় লাগবে।’’ বারবার প্রকল্পের সময়সীমা বদলে যাওয়ায় এ দিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন পুরমন্ত্রী। তিনি যে কাজের অগ্রগতিতে মোটেই খুশি নন, এ দিন তা-ও স্পষ্ট মন্ত্রীর কথায়। স্কাইওয়াকের কাজ খতিয়ে দেখার সময়েই তিনি ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে দেরির কারণ জানতে চান।
স্কাইওয়াকের কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি সংস্থার তরফেই মন্ত্রীকে জানানো হয়, মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আবহাওয়া। টানা বৃষ্টিতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ঝালাই এবং অন্যান্য কাজ করা খুবই বিপজ্জনক। তাই বৃষ্টির সময়ে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। রাইট্স-এর তরফে এ দিন পুরমন্ত্রীকে জানানো হয়, প্রথম থেকেই রাজ্য সরকার কাজের গুণগতমান ও নিরাপত্তা নিয়ে কোনও রকম আপস না করতে নির্দেশ দিয়েছিল। তাই স্কাইওয়াক তৈরির জন্য যে লোহার বিম ও ইস্পাতের পাত ব্যবহার করা হচ্ছে, তার গুণগত মান বারবার গবেষণাগারে পরীক্ষা করে ছাড়পত্র নিয়ে তবেই কাজ করা হচ্ছে। আর যেগুলিতে ছাড়পত্র মিলছে না, সেই সমস্ত লোহা ফেরত পাঠিয়ে নতুন মাল আনতে বেশ কিছুটা সময় লাগছে। তাই ডিসেম্বরে কাজ পুরো শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হবে না। মার্চ হয়ে যাবে।
কিন্তু, শুরুর পর থেকেই কাজ এত ধীরে এগোচ্ছে কেন?
পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাজ শুরুর জন্য রাস্তার দু’পাশের দোকানিদের তুলতেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। ফলে, যে সময়ে কাজ শুরুর কথা ছিল, তার থেকেও কয়েক মাস পরে হয়েছে।’’ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, কাজ শুরুর পরে প্রথম ধাপের ‘পাইলিং’ করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। মাটির নীচে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, কেব্ল লাইন থাকায় খুব সাবধানে বারবার পরিকল্পনা পরিবর্তন করে এগোতে হয়েছে। এর মধ্যে বর্ষা তো একটা বাধা ছিলই।
তবে, সব থেকে বেশি সময় লাগছে কাজের গুণগত মান ও সুরক্ষার বিষয়ে জোর দিতে গিয়েই। পোস্তায় উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর থেকেই রাজ্য সরকার সেতু তৈরির বিষয়ে অনেক বেশি করে মেপে পা ফেলছে। তাড়াহুড়ো করে কোনও ভাবেই কাজের মানের সঙ্গে আপস করতে নারাজ প্রশাসন। তাই দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক তৈরিতেও অনেক বেশি সতর্ক রাজ্য সরকার। পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘গুণগত মান ও সুরক্ষার সঙ্গে আপস করার কোনও জায়গা নেই, এটা যেমন ঠিক, তেমনি কাজটিও যাতে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা যায়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। যারা কাজ করছে, তাদের দেরির পুরো কারণ লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy