সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও অনিকেত মাহাতোকে এখনও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে পোস্টিং দেয়নি রাজ্য। শীর্ষ আদালত নির্ধারিত সময়সীমা পেরোতে চললেও কেন তাঁকে আরজি করে পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে না, এই প্রশ্ন তুলে স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে গেলেন জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট।
জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট-এর সদস্যেরা স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছোনোর আগেই গোটা এলাকা পুলিশি প্রহরায় মুড়ে ফেলা হয়। পোস্টিং সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে দেওয়ার আর্জি জানান অনিকেত, দেবাশিস হালদারেরা। অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের আর্জিতে কর্ণপাত করেনি। এক সময় পুলিশের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বিষয়টিকে ফের ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিহিত করেন অনিকেত।
অনিকেত, দেবাশিসদের অভিযোগ, পুলিশের তরফ থেকে তাঁদের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের আরও অভিযোগ, তাঁদের তিন জন প্রতিনিধি পুলিশি পাহারায় স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ‘উপরমহলের নির্দেশ নেই’ বলে সেই অনুমতিও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
গত ১১ নভেম্বর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে, আরজি করেই পোস্টিং দিতে হবে অনিকেত মাহাতোকে। নির্দেশ কার্যকর করার জন্য রাজ্যকে দু’সপ্তাহ সময় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। অনিকেতের অভিযোগ, সেই সময়সীমা পেরোতে চললেও আদালতের নির্দেশ এখনও মানেনি রাজ্য।
আরজি করে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ-খুনের পর রাজ্য জুড়ে যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার অন্যতম মুখ ছিলেন অনিকেত। গত মে মাসে জানা যায়, এ হেন অনিকেতকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে রায়গঞ্জে। সঙ্গে আন্দোলনের আরও দুই মুখ দেবাশিস হালদার এবং আসফাকুল্লা নাইয়াকেও যথাক্রমে মালদহের গাজোল এবং হুগলির আরামবাগে পোস্টিং দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়। এর বিরোধিতা করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অনিকেত। আলাদা করে মামলা করেন বাকিরাও। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, যদি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পছন্দ মতো পোস্টিং না পাওয়া যায়, তা হলে কাউন্সেলিং-এর অর্থ কী? মেধাতালিকারই বা কী প্রয়োজন? শুধু তা-ই নয়, মেধাতালিকায় বেছে বেছে শুধুমাত্র তাঁদের তিন জনকেই দূরে পোস্টিং দেওয়ার বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ বলেও ব্যাখ্যা করেছিলেন তাঁরা।