Advertisement
E-Paper

সাঁতরাগাছি ঝিলে জলের দূষণ বিপজ্জনক মাত্রায়, বলছে রিপোর্ট

সাঁতরাগাছি ঝিলের জলের নমুনা পরীক্ষা করেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে এমন তথ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২১ ০৭:১৩
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

স্নান তো দূর অস্ত্। জলের দূষণ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে তা মাছ, এমনকি সেখানকার জীববৈচিত্রের জন্যও চূড়ান্ত ক্ষতিকর। সাঁতরাগাছি ঝিলের জলের নমুনা পরীক্ষা করেছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেই রিপোর্টেই উঠে এসেছে এমন তথ্য।

জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, সাঁতরাগাছি ঝিলে মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার সংখ্যা প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ১ লক্ষ ৭০ হাজার এমপিএন (মোস্ট প্রোবাবেল নাম্বার)। আর ফেকাল কলিফর্মের (যা মূলত মানুষের মল-মূত্রে থাকে) সংখ্যা প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ২০ হাজার এমপিএন। জলের গুণগত মান ভাল না খারাপ, তা নির্ধারণের অন্যতম মাপকাঠি হল তাতে

কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার উপস্থিতি। বাকিগুলি হল জলে জৈবিক অক্সিজেনের চাহিদা (বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড), লবণের হার, ক্ষারের হার-সহ একাধিক বিষয়।

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মাপকাঠি অনুযায়ী, গুণগত মান ও ব্যবহারের দিক থেকে জলের পাঁচটি ক্যাটেগরি রয়েছে—‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ এবং ‘ই’। ‘এ’ ক্যাটেগরির ক্ষেত্রে জলে মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫০ এমপিএন বা তার কম থাকার কথা। ক্যাটেগরি ‘বি’-এর ক্ষেত্রে মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫০০ এমপিএন বা তার কম, এবং ক্যাটেগরি ‘সি’-এর ক্ষেত্রে মোট কলিফর্ম প্রতি ১০০ মিলিলিটারে ৫০০০ এমপিএন বা তার কম থাকার কথা। কিন্তু সাঁতরাগাছি ঝিলের জলের নমুনা পরীক্ষাতেই পরিষ্কার, সেখানে দূষণের মাত্রা এই মাপকাঠির থেকে বহু-বহু গুণ বেশি।

এমনিতে এই ঝিলের জলের দূষণ নিয়ে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। পাঁচ বছর আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা রুজু হয়েছিল। তার পরে ধাপে ধাপে ঝিলকে দূষণমুক্ত করতে নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরি, ঝিলপাড়ের দখলদারদের সরানো-সহ একাধিক প্রস্তাবের কথা উঠে এসেছিল। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করে পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানিয়েছিলেন, সাঁতরাগাছি ঝিলের দূষণের মাত্রা তো কমেইনি, উল্টে নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট তৈরি এবং দখলদার সরানো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এক পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘জলের মানোন্নয়নের জন্য অবিলম্বে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা দরকার।’’ সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টেই স্পষ্ট, সেখানে দূষণ কী বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছেছে!’’

তবে পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, শুধু সাঁতরাগাছি ঝিলই নয়, রাজ্যের সিংহভাগ পুকুর, জলাশয়, জলাভূমির এমনই অবস্থা। সেগুলি সংরক্ষণের জন্য যদি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তা হলে বাস্তুতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়বে। জলাভূমি দূষণ, বিপর্যয়, ভূগর্ভের জলদূষণ ও সঙ্কট, জলবায়ু পরিবর্তন-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ, শুক্রবার একটি ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করেছে পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’। সংগঠনের সম্পাদক নব দত্ত জানাচ্ছেন, আলোচনায় গৃহীত প্রস্তাবগুলি লিপিবদ্ধ করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।

Water pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy