Advertisement
০২ মে ২০২৪

বাড়িতে বৃদ্ধের রক্তাক্ত দেহ

যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা) বিশাল গর্গ জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনও কিছু বলা সম্ভব নয়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পরিচারিকা এসে দেখেন, ঘরের দরজা খুলছেন না কেউ। তাই বাড়ির মালিককে ডেকে এনে ‘ডুপ্লিকেট’ চাবি দিয়ে ঘর খোলা হয়। ভিতরে ঢুকেই আঁতকে ওঠেন দু’জন। দেখা যায়, বাড়ির কর্তা, বছর পঁয়ষট্টির প্রবীর দাস খালি গায়ে উপুড় হয়ে বিছানার পাশে পড়ে় রয়েছেন। পুরো মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে।

খবর যায় পুলিশে। পুলিশ ঘটানস্থলে এসে দেখে, ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন থাকলেও, তাঁর সারা শরীর রক্তে এমন ভাবে ভেসে গিয়েছে যে, শরীরের অন্য কোনও অংশ দেখা যাচ্ছে না।

পুলিশ জানিয়েছে, এটা স্বাভাবিক কারণে মৃত্যু, না খুন, মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বাড়ির ভিতরের কোনও জিনিসও লন্ডভন্ড বা ছড়ানো ছিল না।

যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা) বিশাল গর্গ জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনও কিছু বলা সম্ভব নয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লেক থানার ২০এম, বালিগঞ্জ টেরাসের ওই বাড়ির একতলার বাসিন্দা প্রবীরবাবু প্রায় বছর কুড়ি ধরে সেখানে ভাড়া থাকতেন। স্ত্রী সাগরিকা দাসের বুটিকের ব্যবসা। সেই কাজেই তিনি এখন বেঙ্গালুরু গিয়েছেন। একমাত্র মেয়ে ঐন্দ্রিলা বিবাহ সূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। প্রবীরবাবু নিজেও এক সময়ে পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তাঁর সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়। তার পরে হাত-পা অসাড় হয়ে যাওয়ায় তিনি ভাল করে হাঁটতেও পারতেন না। লাঠি নিয়ে ঘরের ভিতরেই একটু-আধটু হাঁটাচলা করতেন।

গত বুধবার বুটিকের কাজেই সাগরিকাদেবী বেঙ্গালুরু যান। আগামী সোমবার ছিল তাঁর ফেরার কথা। কিন্তু তার আগে মঙ্গলবার সকালে বাড়ির মালিকের ফোন পেয়ে তিনি কলকাতায় থাকা আত্মীয়দের ফোন করেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন প্রবীরবাবুর ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী এবং মেয়ে-সহ মাসতুতো বোনেরা। সকলেই জানান, সাগরিকাদেবী ব্যবসার কাজে বাইরে গেলে প্রবীরবাবু বাড়িতে একাই থাকতেন। পরিচারিকা সকালে এসে কাজ করে যান। বাকি সময়ে প্রবীরবাবুর সঙ্গী একমাত্র পোষ্য ‘এপ্রিল’ নামে এক ল্যাব্রা়ডর।

ওই বাড়িরই অন্য বাসিন্দারা জানান, প্রবীরবাবুর কুকুরটি চেনা-অচেনা কেউ এলেই প্রচণ্ড চিৎকার করে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে তার কোনও চিৎকারও শোনা যায়নি। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় কেউ যে ঢুকেছিল, সে সম্ভাবনাও কম। কারও ভিতরে ঢোকার কোনও চিহ্নও নজরে পড়েনি তদন্তকারী অফিসারদের। প্রবীরবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে সাগরিকাদেবী বেঙ্গালুরু থেকে এবং তাঁদের মেয়ে মুম্বই থেকে রওনা হয়েছেন বলে আত্মীয়েরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE