Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Death

হাসপাতাল চত্বরে বৃদ্ধের দেহ, ক্ষত খুবলে খেল কাক

চোখের সামনে এই ঘটনা দেখলেন হাসপাতালে আসা বিভিন্ন রোগীর পরিজনেরা। পুলিশের অনুমান ওই ব্যক্তি একজন ভবঘুরে।

হাওড়া জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তিকে। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

হাওড়া জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তিকে। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

করোনা আবহে কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাই হোক বা কারও মৃত্যু হলে তাঁর সৎকারের ব্যবস্থা করা— নানা সময়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে রোগীর পরিজনেদের। তবে সোমবার যে দৃশ্যের সাক্ষী রইল হাওড়া জেলা হাসপাতাল, তা সম্ভবত আগে কখনও ঘটেনি। হাসপাতাল চত্বরেই কয়েক ঘণ্টা পড়ে রইল এক ব্যক্তির মৃতদেহ। শুধু তা-ই নয়, ওই ব্যক্তির পায়ের ক্ষত ঠুকরে খেল কাক। চোখের সামনে এই ঘটনা দেখলেন হাসপাতালে আসা বিভিন্ন রোগীর পরিজনেরা। পুলিশের অনুমান ওই ব্যক্তি একজন ভবঘুরে।

হাসপাতাল চত্বরে সে সময়ে উপস্থিত রোগীদের পরিজনেদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে ওয়ার্ডমাস্টারের ঘরের সামনে পড়ে থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি বা তাঁকে ভর্তি করতেও উদ্যোগী হননি। রাস্তায় পড়ে বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন তিনি।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ ওয়ার্ডমাস্টারের অফিসের সামনে পড়ে ছিলেন না। তিনি অসুস্থ কি না, তা-ও প্রথমে বোঝা যায়নি। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওয়ার্ডমাস্টারের ঘরের সামনে মলিন পোশাক পরা ওই বৃদ্ধকে শুয়ে থাকতে দেখেন অন্য রোগীদের আত্মীয়-পরিজনেরা। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই ব্যক্তিকে আগেও কয়েক দিন হাসপাতাল চত্বরে দেখা গিয়েছিল। এ দিনও তিনি হাসপাতালের সামনে ঋষি বঙ্কিম সরণিতে ঘোরাঘুরি করছিলেন। পরে তাঁকে ওয়ার্ডমাস্টারের ঘরের সামনে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক রোগীর আত্মীয় সোনালি নস্কর বলেন, ‘‘দুপুর আড়াইটে থেকে ওই ভাবেই উনি পড়ে ছিলেন। বোতল থেকে এক বার জলও খেয়েছেন। কোভিড-রোগী ভেবে কেউ এগিয়ে আসেননি। ওঁর পায়ে ক্ষত থাকায় সেখানে কাক এসে ঠোকরাচ্ছিল। আমরা ওয়ার্ডমাস্টারকে বিষয়টি জানালে তিনি ওই বৃদ্ধকে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’’

হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৃদ্ধ যেখানে পড়ে ছিলেন বলে শোনা যাচ্ছে, আমি সেখান দিয়ে দেড়টার সময়ে গিয়েছি। কিন্তু তাঁকে দেখতে পাইনি। এমন অনেকেই খাবারের আশায় হাওড়া হাসপাতালে এসে ঢোকেন। অসুস্থ থাকলে ভর্তি করে নেওয়া হয়। ওই ব্যক্তি যে অসুস্থ, বুঝব কেমন করে? তা ছাড়া, খবর পাওয়া মাত্রই তাঁকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন ওয়ার্ডমাস্টার। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Howrah District Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE