Advertisement
E-Paper

বারবার বললেও সারাই হয়নি পাঁচিল, আক্ষেপ মায়ের

এ দিন খবর পেয়ে অরুণাচলের সুভাষপল্লিতে তার বাড়িতে যায় স্কুলের সহপাঠী সৌমিক লাহা, ইমরান আলি মোল্লা, অরভিন বালা, শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০২:১৫
পাঁচিল ভেঙে এখানেই মৃত্যু হয় সায়ন রায়ের (ইনসেটে)। ছবি তুলতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়েরা। বুধবার, হাতিয়াড়ায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

পাঁচিল ভেঙে এখানেই মৃত্যু হয় সায়ন রায়ের (ইনসেটে)। ছবি তুলতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়েরা। বুধবার, হাতিয়াড়ায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বিপদ বুঝে সাইকেল থেকে ভাই অয়ন রায়কে ছিটকে ফেলে দিয়েছিল দাদা সায়ন রায় (১৩)। আর তাতেই কোনও ভাবে বেঁচে গিয়েছে সাত বছরের অয়ন। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে দুই শিশুর ঠাকুরমা স্বাতী রায় বলেন, ‘‘রাস্তাটা আর একটু পার হলেই দু’জনে বেঁচে যেত। হুড়মুড়িয়ে পাঁচিল ভেঙে পড়ছে দেখে সায়ন ছোট ভাইকে সাইকেল থেকে গলির মুখে ছুড়ে দেয়। সে জন্য অয়নের কাঁধে চিড়, হাত-পা ছড়ে যাওয়া ছাড়া কিছু হয়নি।’’

বাগুইআটির চিত্তরঞ্জন কলোনি হিন্দু বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল সায়ন। এ দিন খবর পেয়ে অরুণাচলের সুভাষপল্লিতে তার বাড়িতে যায় স্কুলের সহপাঠী সৌমিক লাহা, ইমরান আলি মোল্লা, অরভিন বালা, শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। কারও সঙ্গে ক্লাস থ্রি, কারও সঙ্গে ক্লাস সিক্স থেকে বন্ধুত্ব ছিল সায়নের। ইমরান জানায়, সায়নের সঙ্গে কী ঘটেছে, তা সে ক্লাসের বাকি ছাত্রদের কাগজ পড়ে শুনিয়েছে। প্রথম পিরিয়ডের পরে স্কুল ছুটি হয়ে গেলে তারা সায়নের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। নস্করপাড়ার বাসিন্দা সৌমিক বন্ধু ইমরানকে বলে, ‘‘গুদামের আর একটা পাঁচিলের অবস্থাও দেখ খারাপ। পাঁচিল সারাইয়ের জন্য নাকি অনেক বার বলা হয়েছে। কথাটা শুনলে হয়তো সায়নকে এ ভাবে প্রাণ হারাতে হত না।’’

বস্তুত, বুধবার থেকে এই প্রশ্নেই গুদাম মালিককে গ্রেফতারের দাবিতে সরব প্রতিবেশী থেকে সায়নের পরিবার। ছাত্রটির মা অনিমা রায় বলেন, ‘‘সকলে বলছে টাকার জোরে বেঁচে যাবে অভিযুক্ত। তা যেন না হয়। ছেলে আর ফিরবে না ঠিকই, কিন্তু ওর মৃত্যুর বিচার যেন পাই।’’ অনিমার আক্ষেপ, ‘‘স্কুলে যাওয়ার পথে কমজোরি দেওয়াল সারাইয়ের জন্য বারবার বলা সত্ত্বেও কেউ কানে তুলল না?’’ পুলিশ জানিয়েছে, গুদামের মালিকের বাড়িতে তালা। বন্ধ রয়েছে মোবাইলও। তাকে ধরার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

অয়ন আর্জেন্টিনা, আর সায়ন ছিল ব্রাজিলের সাপোর্টার। অনিমার কথায়, ‘‘এই নিয়ে ঘরেই বিশ্বযুদ্ধ বেধে গিয়েছিল। চট করে অয়ন সায়নকে দাদা ডাকত না। এখন সব সময়ে জিজ্ঞাসা করছে, দাদা কই?’’ কথাগুলো নিচু স্বরে বলছিলেন সন্তানহারা মা। কারণ ছোট ভাই এখনও জানে না, তার দাদা আর নেই।

student Death Wall break
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy