Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Electrocution

electrocution: জল গরম করার যন্ত্র ছুঁতেই মৃত্যু বালকের

পুলিশের তরফে মৃত বালকের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মৃতদেহের ময়না-তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 সিদ্ধার্থ মণ্ডলের দিদিমা ও মামা। বুধবার, কসবার বাড়িতে।

সিদ্ধার্থ মণ্ডলের দিদিমা ও মামা। বুধবার, কসবার বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২১ ০৭:২২
Share: Save:

অল্পেই ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে ছেলের। তাই সব সময়ে সে যাতে উষ্ণ জলে স্নান করতে পারে, তাই জল গরম করার বৈদ্যুতিক স্টিক কিনে এনেছিলেন মা। আর তাতেই কাল হল। স্নানের আগে জলে ডোবানো সেই যন্ত্র ছুঁতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বছর আটেকের বালকের!

বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কসবার কলুপাড়া লেনে। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত বালকের নাম সিদ্ধার্থ মণ্ডল (৮)। তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, সিদ্ধার্থের বাবা-মা এখন আর একসঙ্গে থাকেন না। কয়েক বছর আগেই মায়ের সঙ্গে মামাবাড়িতে চলে এসেছিল সে। সিদ্ধার্থের মামা এবং দাদু রিকশা চালান। সংসার টানতে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তার মা শম্পা দাস।

প্রতিদিনের মতো এ দিনও ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শম্পাদেবী। নাতিকে খেতে দিয়ে জামাকাপড় তুলতে গিয়েছিলেন সিদ্ধার্থের দিদিমা। ওই বৃদ্ধা বলেন, ‘‘খাবার খাওয়ার আগে প্রতিদিন জল গরম করতে বসাই। এ দিনও একটা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে জল নিয়ে তাতে স্টিকটা বসিয়ে দিয়েছিলাম। খাবার দেখে সিদ্ধার্থ আগে দাঁত মাজবে বলে বায়না ধরেছিল। কিন্তু আগে খেয়ে তার পরে দাঁত মাজানো হবে বলে ওকে ঘরে রেখেই বেরিয়েছিলাম। কিন্তু আমি বেরিয়ে যেতেই যে এই কাণ্ড হয়ে যাবে, বুঝিনি।’’

সিদ্ধার্থের মামা সুকুমার দাস জানান, তাঁর মা ঘরে এসে দেখেন, মেঝেয় পড়ে রয়েছে সিদ্ধার্থের দেহ। হাতে শক্ত করে ধরা দাঁত মাজার ব্রাশ। জলের পাত্র থেকে বৈদ্যুতিক স্টিকটা বাইরে পড়ে রয়েছে। এর পরে দেখা যায়, ওই পাত্রের জলেই ভাসছে খানিকটা দাঁত মাজার মাজন। ‘‘মনে হয়, জলে পড়ে যাওয়া ওই টুথপেস্টটা হাত দিয়ে তুলতে গিয়েছিল ও। তাতেই সব শেষ।’’— বলছেন সুকুমার। তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ফিরে সিদ্ধার্থকে গড়িয়াহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, কিছু ক্ষণ আগেই বালকের মৃত্যু হয়েছে।

এর পরেই খবর যায় কসবা থানায়। পুলিশের তরফে মৃত বালকের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মৃতদেহের ময়না-তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সেই ময়না-তদন্ত হওয়ার কথা।

কলুপাড়া লেনের ছোট্ট ঘরে বসে সিদ্ধার্থের মা এ দিন বলেন, ‘‘ওর বাবা আর আমাদের সঙ্গে থাকে না। কিন্তু ছেলেকে কখনও বাবার অভাব বুঝতে দিইনি। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই কাজে ঢুকেছিলাম। এখানে চলে আসার পরে বালিগঞ্জের একটা স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ওকে নতুন করে ভর্তি করিয়েছিলাম। এখন আর কাকে নিয়ে ভাবব? কাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখব?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electrocution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE