প্রতীকী ছবি।
প্রতারিতদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে গেল প্রতারক। বুধবার চাঁদনি চক এলাকা থেকে ওই প্রতারক, করণদীপ বসুকে গ্রেফতার করে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট-সহ একাধিক থানায় প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার এক বছর বাদে করণদীপকে গ্রেফতার করা হল। সে একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা চালাত। ২০১২ সালে কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে বেশ কয়েকটি অফিস খোলে করণদীপের সংস্থা। ভিন্ রাজ্যেও ওই সংস্থার অফিস ছিল। গত বছরের জুলাইয়ে বোস ইনস্টিটিউটের এক গবেষক অভিযোগ করেন, করণদীপের ওই সংস্থায় তিনি টাকা রেখেছিলেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে টাকা ফেরত নিতে গিয়ে দেখেন, অফিসই বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, ২০১২ সালে চারটি সংস্থা খোলে অভিযুক্ত। সেই সঙ্গে মোটা টাকার বিনিময়ে এজেন্টও নিয়োগ করে সে। বোস ইনস্টিটিউটের এক কর্মীও সেই এজেন্টের তালিকায় ছিল। মূলত ওই কর্মীর উদ্যোগেই বোস ইনস্টিটিউটের ওই গবেষক করণদীপের সংস্থায় টাকা বিনিয়োগ করেন। সারদা-কাণ্ডের পরে উদ্বিগ্ন আমানতকারীরা করণদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁদের আরবিআই-এর শংসাপত্র দেখানো হয়।
পুলিশের দাবি, এতে আমানতকারীরা প্রথমে আশ্বস্ত হয়েছিলেন। আমানতকারীদের প্রলোভিত করার জন্য আরবিআইয়ের নথি এবং লোগো জাল করেছিল করণদীপ। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘করণদীপ আমানতকারীদের লগ্নির টাকা বিদেশে খাটানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল।’’ কিন্তু কিছু দিন পরেই আমানতকারীরা বুঝতে পারেন তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এর পরেই তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তত দিনে করণদীপ গা ঢাকা দিয়েছে।
পুলিশের দাবি, লুকিয়ে থাকার সময়েও করণদীপের সঙ্গে এক এজেন্টের যোগাযোগ ছিল। ওই এজেন্টই করণদীপকে তার বিরুদ্ধে করা নানা মামলার খবর জানাত। এ কথা জানার পরে আসরে নামেন প্রতারিতরাই। পুলিশকে সঙ্গে কথা বলে তাঁরা ওই এজেন্টকে জানান প্রাপ্য টাকার কিছুটা দিলেই তাঁরা মামলা তুলে নেবেন। তবে এর জন্য করণদীপকে কলকাতায় এসে ওই টাকা দিতে হবে। এই টোপ গেলে করণদীপ। মুম্বই থেকে কলকাতায় আসার সিদ্ধান্ত নেয় সে। যা আগে থেকেই জানতেন তদন্তকারীরা অফিসারেরা। সেই মতো চাঁদনি চকে লুকিয়ে ছিলেন তদন্তকারীদের একটি দল। মুম্বই থেকে কলকাতা বিমানবন্দর নেমে সোজা চাঁদনিতে প্রতারিতদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে আসে করণদীপ। সেখানেই তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তদন্তকারীরা। বুধবার তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy