Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

খালের ধারে মহিলার দেহ, দায়ের খুনের অভিযোগ

কেষ্টপুর খালের ধারে ঝোপ থেকে উদ্ধার হয়েছিল হাত-পা বাঁধা এক মহিলার পচাগলা দেহ। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর পরিচয় জানা যায়। তাঁর পরিবারের তরফে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

কেষ্টপুর খালের ধারে ঝোপ থেকে উদ্ধার হয়েছিল হাত-পা বাঁধা এক মহিলার পচাগলা দেহ। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর পরিচয় জানা যায়। তাঁর পরিবারের তরফে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মৃতার নাম রুমা মণ্ডল (৩৫)। তিনি মিনাখাঁর কুমারজোল গ্রামে থাকতেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ওই গ্রামের আকবর গাজি ও তাঁর স্ত্রী নাজমা বিবি রুমাকে বেশ কিছু দিন ধরে উত্ত্যক্ত করছিলেন। আকবরের দুই ছেলে ও তাঁদের এক বন্ধু নজরদারি চালাতেন রুমার পরিবারের উপরে। আকবর রুমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং রুমা তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া বলেও অভিযোগ তাঁর পরিবারের। আকবরের স্ত্রী কুমারজোল পঞ্চায়েতের সদস্যা তথা তৃণমূল নেত্রী।

পুলিশ জেনেছে, রুমা বসিরহাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কাজ করতেন। কুমারজোল থেকে মালঞ্চে নেমে বাসে করে বসিরহাট যেতেন। হুমকির ঘটনার পর থেকে তাঁর বড় মেয়ে সুস্মিতা ফোনে রুমার সঙ্গে ঘনঘন যোগাযোগ রাখতেন।

রুমার দাদা রাজু মণ্ডল জানান, বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে অটো করে মালঞ্চে যান রুমা। অটোয় যাওয়ার সময়ে সুস্মিতার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথাও হয়। কিন্তু তার পরে সকাল সাড়ে দশটা থেকে রুমার ফোন বন্ধ হয়ে যায়। চার দিকে খোঁজ না পেয়ে মালঞ্চ থানায় যায় রুমার পরিবার। রুমার দিদি সোমা নস্করের অভিযোগ, পুলিশ কোনও রকম সহযোগিতা তো করেইনি, উল্টে দুর্ব্যবহার করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা মালঞ্চ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। রাজুর অভিযোগ, ‘‘পুলিশকে বারবার আকবর ও তাঁর ছেলেদের মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করার দাবি জানাই আমরা।’’ বৃহস্পতিবার নিউ টাউন থানা থেকে পুলিশ মিনাখাঁ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে।

শুক্রবার রুমার দেহ শনাক্ত করেন তাঁর স্বামী তাপস মণ্ডল। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, রুমার স্বামী তাপস বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের কাজ করেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাপসবাবুর দুই বিয়ে। তিন মেয়েকে নিয়ে রুমা থাকতেন কুমারজোলে। অপর স্ত্রী থাকেন বসিরহাটে। আকবর রুমার স্বামীর বন্ধু। তাপসের অনুপস্থিতির সুযোগে আকবর মাঝেমধ্যেই তাঁর বাড়িতে যেতেন। এর মধ্যে আকবর রুমাকে কুপ্রস্তাবও দেন। রুমা রাজি না হওয়ায় তাঁকে গুলি করে মারার, অ্যাসিড ছুড়ে মুখ পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন আকবর। এমনই অভিযোগ তুলেছে রুমার পরিবার।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু আকবর নন, তাঁর স্ত্রী নাজমাও রুমাকে হুমকি দিতেন। তাঁর দুই ছেলে ও তাঁদের এক বন্ধুকে দিয়ে নজর রাখা হত রুমার উপরে। এমন অভিযোগও পুলিশের কাছে তোলা হয়েছে।

কিন্তু কেন মিনাখাঁ থানার পুলিশ শুরুতেই উদ্যোগী হয়নি? পুলিশের তরফে সদুত্তর মেলেনি। নিউ টাউন থানায় বসে রুমার পরিবারের এক জন বলেন, ‘‘গ্রামে আমাদের পরিবারের বাকিদের কী হাল, জানি না। আতঙ্কে রয়েছি। আকবর প্রভাবশালী, নিউ টাউনে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। জানি না গ্রামে ফিরতে পারব কি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Decomposed body Kestopur body found
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE