Advertisement
E-Paper

বাড়ানো হোক এসি আস্তাবল, দাবি

বর্ষা শেষ পর্যন্ত আসায় যেন সত্যিই স্বস্তি পেল ওরা। প্রবল গরমে ট্রেনিং করতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছিল প্রায় প্রত্যেকেরই। সামান্য একটু দৌড়ঝাঁপ করেই হাঁফিয়ে যাচ্ছিল ঘোড়সওয়ার পুলিশের অলিভার, ব্র্যাভো, অ্যালেস্কিরা।

অভীক বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০০:৩২
স্বস্তির একমাত্র আস্তানা। —নিজস্ব চিত্র।

স্বস্তির একমাত্র আস্তানা। —নিজস্ব চিত্র।

বর্ষা শেষ পর্যন্ত আসায় যেন সত্যিই স্বস্তি পেল ওরা।

প্রবল গরমে ট্রেনিং করতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছিল প্রায় প্রত্যেকেরই। সামান্য একটু দৌড়ঝাঁপ করেই হাঁফিয়ে যাচ্ছিল ঘোড়সওয়ার পুলিশের অলিভার, ব্র্যাভো, অ্যালেস্কিরা। একই অবস্থা হচ্ছিল ডগ স্কোয়াডের ন্যান্সি, রোজি, কোকোরও। কিন্তু চাকরির প্রয়োজনে নিয়মিত ট্রেনিং তো করতেই হবে। তাই ভোর হলেই দল বেঁধে বেরিয়ে পড়া। তবে গরম বলে ছাড় মিলেছিল বেশ কিছু ট্রেনিংয়ে। বেড়েছিল কিছুটা যত্ন-আত্তিও।

বছর তিনেক আগে প্রচণ্ড গরমে মৃত্যু হয়েছিল কলকাতা পুলিশের একটি ঘোড়ার। বৃহস্পতিবারও টালিগঞ্জের বডিগার্ড লাইন্সে হজম সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যায় মারা যায় ৫ বছরের একটি ঘোড়া। সে কারণে গরম এলেই অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে যান কলকাতা পুলিশের ঘোড়সওয়ার বিভাগের কর্তারা। গরম থেকে ঘোড়াদের স্বস্তি দিতে গত বছরের ২১ জুন একটি বাতানুকূল আস্তাবলও উদ্বোধন করেছিলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। সেখানে একসঙ্গে চারটি ঘোড়াকে রাখা সম্ভব।

কলকাতা ঘোড়সওয়ার পুলিশ বিভাগে এখন ঘোড়ার সংখ্যা ৭২। এর মধ্যে ৪৮টি ঘোড়া রয়েছে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের কলকাতা পুলিশের আস্তাবলে। বাকিরা টালিগঞ্জের বডিগার্ড লাইন্সে। একটি মাত্র বাতানুকূল আস্তাবল এতগুলি ঘোড়ার জন্য যে যথেষ্ট নয়, তা মানছেন ওই বিভাগের কর্তারাই। গরমের জন্য তো বটেই, এমনকী অসুস্থ ঘোড়াদের চিকিৎসার জন্য আরও বাতানুকূল আস্তাবল দরকার বলেই মত তাঁদের। ঘোড়সওয়ার পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ অভ্রকিশোর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আরও কয়েকটি বাতানুকূল আস্তাবল করে দেওয়ার জন্য আমরা উপরমহলে প্রস্তাব জানিয়েছি। এ ছাড়া একটি সুইমিং পুলেরও প্রস্তাব দেওয়া রয়েছে।’’ মাঠে কোনও ঘোড়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আনার জন্য ‘হর্স ফ্লোটার’-এর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক সুরজিৎ বসু।

গরমে কতটা ছাড় মেলে এই ঘোড়াদের? পুলিশ সূত্রের খবর, এস এন ব্যানার্জি রোড থেকে রোজ সকাল ছ’টায় দল বেঁধে অলিভার, ব্র্যাভোরা চলে যায় ধর্মতলার গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে বিড়লা গ্রাউন্ডে। সেখানে চলে ট্রট, ক্যান্টার, গ্যালপ বা ফ্লাইটের মতো বিভিন্ন রকম হাঁটা এবং দৌড় প্র্যাক্টিস। তবে গরমের জন্য ঘণ্টাখানেক থেকে সময় কমিয়ে আনা হয়েছে ৩০-৪০ মিনিটে। প্র্যাক্টিস শেষে তাদের ছেড়ে রাখা হয় কিছুক্ষণ। সকালে নিয়মিত স্নানের পাশাপাশি বিকেলেও বরাদ্দ এক বার হালকা স্নান। এ ছাড়া আস্তাবলে করা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, যাতে কোনও ভাবে ‘পাওয়ার ট্রিপ’ করলে সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প সংযোগ চালু হয়ে যায়।

গরমে বিশেষ যত্ন নেওয়া হয় পুলিশ কুকুরদেরও। পুলিশ সূত্রে খবর, সাধারণত নিজেদের ‘ডগ পার্ক’-এ প্র্যাক্টিস করলেও সপ্তাহে দু’-তিন দিন ডগ স্কোয়াডের ৩৬টি কুকুরকে যেতে হয় বিগ্রেড প্যারেড গ্রাউন্ড, প্রিন্সেপ ঘাট বা চক্ররেলের ট্র্যাকে। তবে অতিরিক্ত গরমের জন্য প্র্যাক্টিসের সময় ২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে এক থেকে দেড় ঘণ্টায়। রোজ চার বার করে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয় প্রত্যেকের।

স্বাভাবিক খাদ্য-তালিকার পাশাপাশি দেওয়া হয় দই, বেলের শরবত, চিকেন জুস। প্রতিদিন বিকেলে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের সুইমিং পুলে নামিয়ে দেওয়া হয় তাদের। চিকিৎসক দেবানন্দ বসাক জানান, ডিউটি করে ফেরার পরে প্রতিটি কুকুর-পুলিশকর্মীকে দিন অদলবদল করে তাদের হাসপাতালেই স্যালাইন দেওয়া হয়। ডগ স্কোয়াডের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত অফিসার-ইন-চার্জ রাজনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালেই এসি রয়েছে। তবে ভেট এক্স-রে, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন ও আরও কিছু যন্ত্রপাতির জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’

প্রস্তাবগুলি নিয়ে কী বলছেন লালবাজারের শীর্ষকর্তারা? ঘোড়সওয়ার পুলিশের প্রস্তাব নিয়ে যুগ্ম কমিশনার (সদর) রাজীব মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়গুলি আমাদের নজরে আছে। তহবিল অনুযায়ী খতিয়ে দেখা হবে।’’ ডগ স্কোয়াডের প্রস্তাবগুলিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধদমন) পল্লবকান্তি ঘোষ।

AC stable Kolkata Horse Rain monson Surendranath Banerjee road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy