Advertisement
E-Paper

‘আমরা-ওরা’য় ফেরত যাচ্ছে টাকা

প্রত্যেক বিধায়ক তাঁর বিধানসভা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকা খরচ করতে পারেন। রাজ্য সরকারের বরাদ্দ করা সেই টাকা ৩০ লক্ষ টাকা করে দু’দফায় পাওয়া যায়। উত্তর দমদমের সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের অভিযোগ, দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ ১৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে তুলেও তা ফেরত পাঠিয়েছে উত্তর দমদম পুরসভা।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০৭

প্রতি বর্ষাতেই পুকুর আর রাস্তা একাকার হয়ে যায় নিমতায়। যার ফলে অবধারিত ভাবেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এ বার তাই নিমতার বাসিন্দাদের দাবি, পুকুর এবং রাস্তার মধ্যে একটা প্রাচীর তৈরি করুক পুরসভা। ওই এলাকার দুর্গানগরের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, একটু বৃষ্টি হলেই কেন বাড়ি বাড়ি জল ঢুকবে? উন্নয়ন চেয়ে বাসিন্দারা যেখানে সরব, সেখানে এলাকার বিধায়কের অভিযোগ, তিনি সিপিএমের নেতা বলেই তাঁর উন্নয়ন তহবিলের অর্থ ফিরিয়ে দিয়েছেন উত্তর দমদম পুর কর্তৃপক্ষ।

প্রত্যেক বিধায়ক তাঁর বিধানসভা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টাকা খরচ করতে পারেন। রাজ্য সরকারের বরাদ্দ করা সেই টাকা ৩০ লক্ষ টাকা করে দু’দফায় পাওয়া যায়। উত্তর দমদমের সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্যের অভিযোগ, দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ ১৬ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে তুলেও তা ফেরত পাঠিয়েছে উত্তর দমদম পুরসভা। আর নিউ ব্যারাকপুর পুরসভা শুরু থেকেই সেই টাকা খরচ করতে কোনও আগ্রহই দেখায়নি। তন্ময়ের কথায়, ‘‘অথচ তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেই তাঁদের ওয়ার্ডে সুপারিশ মতো বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য তহবিলের অর্থ বরাদ্দ করেছিলাম।’’

সেই প্রসঙ্গে তন্ময়বাবু জানান, উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সুবোধ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলে খলিসাকোটায় তাঁর ওয়ার্ডে একটি পুকুরপাড় বাঁধানোর জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা খরচের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। সাত নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রণব ঘোষের সুপারিশ মেনে ঝিলের উপরে যাতায়াতের সেতু নির্মাণে ১৫ লক্ষ টাকা খরচের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। তন্ময়ের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের বরাদ্দ টাকায় মানুষের উন্নয়নের দাবিই তো পূরণ হত!’’

২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালী টেম্পল রোডের বাসিন্দা রিনা দাসবিশ্বাস বলেন, ‘‘পুকুর ও রাস্তার মধ্যে সীমানা তৈরি করা খুবই জরুরি। ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুলের পড়ুয়ারা যাতায়াত করে। বিপদ ঘটতে কত ক্ষণ?’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান পারিষদ রাজর্ষি বসু বলেন, ‘‘পুকুরটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। তাই চেয়েও ওখানে আমরা কোনও কাজ করতে পারিনি।’’ দুর্গানগরের অম্বেডকর সরণির এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘প্রতি বছর বাইরের নোংরা জল ঘরে ঘরে ঢুকে যায়। পাড়ার লোকেরা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে নিকাশি ব্যবস্থা এবং রাস্তার দাবি জানালে বলা হচ্ছে, টাকা নেই। অথচ বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকাতেই তো এই কাজগুলো করা যেত। শুনছি তো সে টাকাও ফিরিয়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ।’’

তন্ময়ের কথায়, ‘‘এই বিরোধ থাকলে আইনের সাহায্য নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কিন্তু মানুষের উন্নয়নের কাজে সেই পথে যেতে হবে কেন? মুখ্যমন্ত্রী এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীও বলেছেন, বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকা ফেলে রাখা যাবে না। তাই অচলাবস্থা কাটার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’’

বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ না করা প্রসঙ্গে উত্তর দমদমের পুরপ্রধান সুবোধবাবুর দাবি, ‘‘প্রথম দফায় কিছু টাকা এলেও পরে কোনও টাকা ঢোকেনি। তা ছাড়া, আমাদের কোনও কাউন্সিলর বিধায়ক তহবিলের টাকায় কাজ করাতে রাজি যদি না হন, সে
ক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি? এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতৃত্বও আমাদের কিছু বলেননি।’’

Development TMC CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy