Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Buddhadeb Bhattacharjee Health Update

ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন থেকে বার করে আনা হল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে, স্থিতিশীল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী

সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট অনুযায়ী, বুদ্ধদেবের শারীরিক পরিস্থিতির সাংঘাতিক অবনতি হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভেন্টিলেশন থেকে বার করার পর প্রয়োজনে তাঁকে বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হবে।

Doctors have brought out Buddhadeb Bhattacharjee from invasive ventilation.

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪৫
Share: Save:

ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্ট থেকে বার করে আনা হল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

সোমবার সকালে বুদ্ধদেবের সিটি স্ক্যান করানো হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে প্রকাশিত মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল।

মেডিক্যাল বোর্ডের এক সদস্য চিকিৎসক সকালে জানান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর রক্তে সিআরপির পরিমাণ কমেছে। অর্থাৎ, রক্তে সংক্রমণের মাত্রা আগের তুলনায় কম। যদিও এখনও তা স্বাভাবিকের অনেকটাই উপরে। আগে তাঁর সিআরপি ছিল তিনশো, সেটাই কমে দেড়শোর কাছাকাছি এসেছে। যা চিকিৎসকদের কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রেখেছে।

বুদ্ধদেবের শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রা আগের চেয়ে বৃদ্ধি করতে পেরেছেন চিকিৎসকেরা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে। এর পরেই তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন থেকে বার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন থেকে বার করে আনার পর বুদ্ধদেবকে প্রয়োজনে বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হবে।

তবে বুদ্ধদেবের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে এখনও পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না চিকিৎসকেরা। এখনও তাঁর সঙ্কট পুরোপুরি কাটেনি। সোমবার সকালে হওয়া সিটি স্ক্যানের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বুদ্ধদেবের শারীরিক পরিস্থিতির সাংঘাতিক অবনতি হয়নি। তবে সঙ্কট পুরোপুরি কেটে গিয়েছে, এমনটাও বলা যাচ্ছে না।

সিটি স্ক্যানের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বুদ্ধদেবের দু’টি ফুসফুসই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আগে থেকেই ফুসফুস দু’টি ক্ষতিগ্রস্ত থাকার ফলে ‘লাং ফাইব্রোসিস’ হয়েছে তাঁর। চিকিৎসাবিদ্যার পরিভাষায় যার অর্থ, রোগীর ফুসফুসের টিস্যুগুলি শক্ত এবং কঠিন হয়ে যাওয়া।

রবিবার বুদ্ধদেবকে দেখে গিয়েছিলেন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডল। ইকো কার্ডিয়োগ্রাম করান চিকিৎসক ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার রিপোর্ট ভাল বলে জানিয়ে চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বুদ্ধদেববাবুর ‘কার্ডিয়াক ফাংশন’ (হৃদ্‌যন্ত্রের কাজ) বেশ ভাল। তাই ফুসফুসের অবস্থা খারাপ থাকলেও উনি লড়ে যাচ্ছেন। শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে। রাইলস টিউবের মাধ্যমে তাঁকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। কোনও সমস্যা ছাড়াই তাঁর খাদ্যনালী দিয়ে খাবার শরীরে ঢুকছে। এটা ভাল লক্ষণ।’’

চিকিৎসক আরও জানান, আচ্ছন্ন করে রাখার প্রক্রিয়া কমিয়ে দেওয়ার ফলে বুদ্ধদেব শুনতে পাচ্ছেন, বুঝতে পারছেন এবং আশপাশটা অনুভব করতে পারছেন। চিকিৎসকেরা ডাকলে সাড়াও দিচ্ছেন। কখনও কখনও ইশারার মাধ্যমে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বোঝানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

বুদ্ধদেব দীর্ঘ দিন ধরেই সিওপিডি-র সমস্যায় ভুগছেন। পরিবার সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরে তাঁর জ্বর আসছিল। শুক্রবার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। শনিবার তিনি ক্রমশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন। ওই দিনই তাঁকে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। যন্ত্রের সাহায্য চলছিল তাঁর শারীরিক প্রক্রিয়া। পরে ধীরে ধীরে তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ventilation Hospital CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE