Advertisement
E-Paper

রক্তদানে সোনার দুল কেন, ক্ষোভ মন্ত্রীদের

নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, রক্তদান স্বেচ্ছায় হয়। সেখানে রক্তদাতাকে বিনিময়ে কোনও রকম দামি জিনিস দেওয়া আইনত নিষিদ্ধ। যাঁরা এই শিবিরের আয়োজন করেছেন, তাঁরা নিয়মের পরোয়া করেননি। কোনও ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি প্রকল্পের প্রতীক ব্যবহার করার জন্য নির্দিষ্ট অনুমতির দরকার হয়। সেটাও তাঁদের নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:২২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বলা হচ্ছে দান। অর্থাৎ, স্বেচ্ছায় যা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই ‘দান’-এ প্রলোভন দেখানো হচ্ছে সোনার কানের দুলের। খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী।

রীতিমতো ব্যানার টাঙিয়ে মুচিপাড়া মহিলা সেবা সঙ্ঘ রবিবার স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরে সোনার কানের দুল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিরক্ত হয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। বিতর্কিত ওই ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি এবং কন্যাশ্রীর লোগো থাকায় বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়।

নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, রক্তদান স্বেচ্ছায় হয়। সেখানে রক্তদাতাকে বিনিময়ে কোনও রকম দামি জিনিস দেওয়া আইনত নিষিদ্ধ। যাঁরা এই শিবিরের আয়োজন করেছেন, তাঁরা নিয়মের পরোয়া করেননি। কোনও ব্যানারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং সরকারি প্রকল্পের প্রতীক ব্যবহার করার জন্য নির্দিষ্ট অনুমতির দরকার হয়। সেটাও তাঁদের নেই।

শিবিরের আয়োজক উল্টোডাঙা-মুচিপাড়া এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতা রবি পাল জানিয়েছিলেন, রক্তের ফোঁটার আকারের সোনার কানের দুল দেওয়া হবে রক্তদাতাদের উৎসাহী করতে। কিন্তু সে তত্ত্ব মানতে নারাজ রক্তদান আন্দোলনকারীদের একাংশ। বরং তাঁদের আশঙ্কা, এ ধরনের কাজে বাড়তে পারে রক্ত বিক্রির মানসিকতা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এক জনের রক্তে চার জনের প্রাণ বাঁচার সম্ভাবনা থাকে। তাই রক্ত দানের জন্য কোনও প্রলোভন দেখানো ঠিক নয়। বরং রক্তদান নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো হোক। দীর্ঘদিন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘এই রাজ্য স্বেচ্ছায় রক্তদান আন্দোলনে সারা দেশকে পথ দেখিয়েছিল। কিন্তু এখন এখানেই রক্তদান শিবিরের নামে যা হচ্ছে, সেটা খুব লজ্জার।’’

আরও পড়ুন: যে জন আছে মাঝখানে

রবিবার চন্দ্রিমাদেবী জানিয়েছেন, সরকারি কোনও ব্লাড ব্যাঙ্ক এই শিবিরের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাঁর কথায়, ‘‘যা হয়েছে, তা খুবই নিন্দনীয়। স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরে সোনার দুল দেওয়া অন্যায়, বেআইনি। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য ভবন নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেবে।’’

রক্তদানে উৎসাহী করতে সোনার দুলের বিজ্ঞাপন, মহিলাদের অপমান বলেও মনে করছেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি জানিয়েছেন, এই সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারী উন্নয়নের চেষ্টা করছে। সেখানে দুলের বিনিময়ে মহিলারা রক্তদানে উৎসাহী হবেন, এটা বিজ্ঞাপন করার মানে মহিলাদের অসম্মান করা। ব্যানারে কন্যাশ্রী প্রকল্পের প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রকল্প রাজ্যকে বিশ্বের দরবারে সম্মানিত করেছে। রাজ্যের মেয়েদের স্বনির্ভর করতে যে প্রকল্প সাহায্য করছে, তার প্রতীক ব্যবহার করে এমন কাজ করা খুবই লজ্জার। তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সব সময়ে নিঃস্বার্থে মানুষের জন্য কাজ করতে বলেন। তাঁর ছবি ব্যবহার করে যা হয়েছে, সেটা অন্যায়। রক্তদানে উৎসাহ বাড়াতে সোনার কানের দুল দেওয়ার ভাবনার নিন্দা করছি। যেখানে স্বেচ্ছায় দান বলা হচ্ছে, সেখানে বিনিময়ে কিছু দেওয়ার কথা আসছে কী ভাবে?’’

তৃণমূলের অন্দরে অবশ্য রবি পালকে নিয়ে আগেও নানা বিতর্ক হয়েছে। মাস খানেক আগে বিধানচন্দ্র রায়ের মূর্তি স্থাপন ঘিরে পুলিশের কিয়স্ক ভাঙা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন রবি পাল। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘এই সব মানুষদের জন্য দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। কিন্তু এগুলো বরদাস্ত করা হবে না।’’

Blood Donation Camp Health Gold Ring রক্তদান শিবির
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy