প্রতীকী ছবি।
পুলিশের জেরার মুখে কখনও বলছেন, লেক গার্ডেন্সে মামার বাড়িতে রয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্স। কখনও আবার অভিযুক্ত জানাচ্ছেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সটি রয়ে গিয়েছে বেঙ্গালুরুতে। যাদবপুরের দুর্ঘটনার পরে দু’দিন কেটে গেলেও এখনও মিলল না ধৃত রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ড্রাইভিং লাইসেন্স। আদৌ তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কি না, তা নিয়েই এখন সন্দিহান তদন্তকারীরা।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রাজা এসসি মল্লিক রোডের কৃষ্ণা গ্লাস ফ্যাক্টরির বাসস্ট্যান্ডের কাছে বেপরোয়া গতিতে এসে পর পর দু’টি দোকানে ধাক্কা মেরেছিল একটি সেডান গাড়ি। সেটি চালাচ্ছিলেন
রাহুল। গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় টমাস সোমি কর্মকার নামে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির। মারাত্মক জখম হন আরও ছ’জন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ওই গাড়িতে চালক-সহ মোট তিন জন ছিলেন। রাতেই ঘটনাস্থলে গাড়ির চালক, বছর বত্রিশের রাহুলকে গ্রেফতার করা হয়। এমনকি, ঘটনার সময়ে রাহুল মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলেও পুলিশ দাবি করেছে। পুলিশি জেরায় রাহুল জানিয়েছিলেন, তাঁর এক বান্ধবী ও তাঁর স্বামীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে নরেন্দ্রপুরের দিকে যাচ্ছিলেন তাঁরা। রবিবার ধৃতকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তার পর থেকেই দফায় দফায় চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
তবে এখনও পর্যন্ত ধৃত রাহুলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের খোঁজ মেলেনি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। জেরায় তিনি প্রথমে জানিয়েছিলেন, লাইসেন্স রয়েছে লেক গার্ডেন্সের মামার বাড়িতে। পরে জানান, সেটি বেঙ্গালুরুর বাড়িতে রয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যে আত্মীয়েরা তা নিয়ে আসবেন।
দুর্ঘটনার সময়ে গাড়িচালক মত্ত অবস্থায় থাকার প্রমাণ মিললেও সে সময়ে গাড়ির গতিবেগ কত ছিল, তা নিয়ে সন্দিহান তদন্তকারীরা। তদন্তকারী এক পুলিশকর্তা জানান, ঘটনাস্থলে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় গাড়ির গতিবেগ কত ছিল, তা এখনও নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তবে দুর্ঘটনার ভয়াবহতা থেকে এটা নিশ্চিত যে, গাড়ির গতি অত্যধিক বেশি ছিল। সেটা কত, তা জানতে পরীক্ষা করা হবে বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেডান গাড়িটি রাহুলের নিজের নয়। এক আত্মীয়ের গাড়ি নিয়েই তিনি সেই রাতে বেরিয়েছিলেন। রাহুলের ওই আত্মীয় বলেন, ‘‘বছর সাতেক আগে গাড়িটি কেনা। মাঝেমধ্যেই গাড়িটি আত্মীয়স্বজনেরা ব্যবহার করেন। সে দিন রাহুলও গাড়িটা নিয়ে বেরিয়েছিল। আমি বাড়ির বাইরে থাকায় সে কথা জানতামও না। রাতে জানতে পারি দুর্ঘটনার কথা।’’
এ দিকে, দুর্ঘটনার পরেই রাজা এসসি মল্লিক রোডে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি বেশ কিছু পরিকল্পনা করছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। ঘটনাস্থলের কাছে একটি স্পিডোমিটার লাগিয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশ। এমনকি, আরও কয়েকটি স্পিডোমিটার লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই রাস্তায় আরও কয়েকটি সিসি ক্যামেরা লাগানোর কথাও ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। তবে এত দিন কেন এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেই রাস্তায় ইতিমধ্যেই স্পিডোমিটার বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্যামেরা লাগানোর ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই
সেই কাজ করা হবে। বেপরোয়া গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy