E-Paper

রাতভর বৃষ্টির পরে সকাল থেকেই নাস্তানাবুদ জনজীবন

মঙ্গলবার সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় বুধবার সকালে দেখা যায়, কলকাতা শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেই জল জমে থেকেছে দুপুর বা বিকেল পর্যন্ত। কোথাও কোথাও আরও বেশি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ০৪:৪৭
থইথই: এক রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বেহালার মতিলাল গুপ্ত রোড। বুধবার।

থইথই: এক রাতের বৃষ্টিতে জলমগ্ন বেহালার মতিলাল গুপ্ত রোড। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

রাতভর বৃষ্টিতে নাজেহাল মহানগর। মঙ্গলবার সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় বুধবার সকালে দেখা যায়, কলকাতা শহরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সেই জল জমে থেকেছে দুপুর বা বিকেল পর্যন্ত। কোথাও কোথাও আরও বেশি। সব চেয়ে করুণ অবস্থা হয় উত্তর কলকাতায়, কাশীপুরের রতনবাবু রোড এলাকার। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই রাস্তা দিনভর জলমগ্ন ছিল। রাস্তার দু’পাশের বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হন। রতনবাবু রোড সংলগ্ন সৎচাষিপাড়াও জলে ডুবে ছিল। বাদ যায়নি দক্ষিণ কলকাতার বেহালা ও ঢাকুরিয়াও। রাস্তায় জল জমে থাকায় এ দিন সকালে কর্মস্থলে পৌঁছতে প্রবল হয়রান হতে হয়েছে শহরের অসংখ্য বাসিন্দাকে। বহু এলাকাতেই যানবাহন চলেছে অত্যন্ত ধীর গতিতে। যার জেরে তৈরি হয়েছে যানজট।

কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত শহরে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ার কামডহরি (৯১ মিলিমিটার) ও বেহালা ফ্লাইং ক্লাব (৯০.৮ মিলিমিটার) এলাকায়। এর পরেই রয়েছে বালিগঞ্জ (৮৭ মিলিমিটার), জোকা (৭৬ মিলিমিটার), মোমিনপুর (৭১ মিলিমিটার), তপসিয়া (৬০ মিলিমিটার), মার্কাস স্কোয়ার (৫৯ মিলিমিটার), ঠনঠনিয়া (৪৬.৬ মিলিমিটার) ও দত্তবাগান (৪১.৫ মিলিমিটার)।

রতনবাবু রোড বুধবার দিনভরই জলমগ্ন ছিল। বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, আগে পরিস্থিতি এমন ছিল না। কিন্তু আজকাল অল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে থাকছে। এক নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘অতীতে রতনবাবু রোডের নীচ দিয়েই নিকাশির জল গঙ্গায় গিয়ে পড়ত। কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে সেই পাইপলাইন বন্ধ করা হয়েছে। তার বদলে গঙ্গায় স্লুইস গেট নির্মাণের কাজ চলছে। এক মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ হলে জল জমার সমস্যা কমবে।’’ এ দিন অস্থায়ী পাম্পের মাধ্যমে জল সরানোর ব্যবস্থা করা হলেও তার কার্যকারিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, জমা জলের যা পরিমাণ, তাতে ওই পাম্প চালিয়ে লাভ নেই। পুরসভা জানিয়েছে, আরও বেশি পাম্প কাজে লাগানো হবে।

এ দিকে, বেহালার ১২৩ থেকে ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় এ দিন দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল। ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মতিলাল গুপ্ত রোড বিকেল পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সেনপাড়া, এম জি রোড, মাজিপাড়া-সহ একাধিক এলাকার জল নামতে রাত পেরিয়ে যায়। সেনপাড়ার বাসিন্দা, পুরসভার এক কর্মী জানান, রাস্তায় হাঁটুজল ছিল। ঢাকুরিয়া সেতু, ঢাকুরিয়া বাজার ও ঢাকুরিয়া স্টেশন এলাকাও দীর্ঘক্ষণ জলমগ্ন ছিল। উত্তর কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট ও মহাত্মা গান্ধী রোডও এ দিন সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ জলে ডুবে ছিল। পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহের যদিও দাবি, ‘‘সারা রাত প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতা পুরসভা বছরভর নিকাশি নালা থেকে পলি তোলার কাজ করে বলেই জল জমলেও দ্রুত নেমে গিয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Water Logged Kolkata Heavy Rainfall

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy