দমদমের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন সেতুর নীচের ভাঙাচোরা অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে রেললাইন। রয়েছে একটি রেল সেতুও। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পড়ে তাই প্রমাদ গুনছেন দমদমের বাসিন্দারা।
দমদম জংশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে কলকাতা স্টেশন হয়ে যে রেললাইন মাঝেরহাট গিয়েছে, তার সেতু এবং লাইন সংলগ্ন দেওয়ালের ক্ষয়িষ্ণু অবস্থার জন্যই আতঙ্কে ভুগছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই রেললাইন এবং দমদম জংশনের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি সেতু ও কংক্রিটের স্ল্যাবের উপরে। প্ল্যাটফর্মের নীচ দিয়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মাড়োয়ারি বাগানের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন। পাশাপাশি, ওই রেলসেতুর নীচ থেকে মধুগড় বাজার যাওয়ার জন্য অটো পাওয়া যায়। সেই অটোস্ট্যান্ডের কাছে সেতুর তলায় চাঙড় খসে বেরিয়ে পড়েছে মরচে পড়া লোহার বিম। প্ল্যাটফর্ম এবং রেললাইন যে স্ল্যাবের উপরে রয়েছে, তার উপর দিয়ে নিয়মিত জলের প্রবাহে শ্যাওলা পড়ে গিয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় সিমেন্টের প্রলেপ খসে তৈরি হয়েছে অজস্র ফাটল।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম সাহা বলেন, ‘‘সেতুটির বয়স অন্তত পঁচিশ বছর হবে। সেতুর তলা দিয়ে স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। আমরা কেউ ইঞ্জিনিয়ার নই। কিন্তু যে ভাবে প্রায়ই সেতুর তলা থেকে চাঙড় খসে পড়ে, তাতে ভয় হয়।’’ এক অটোচালকের অভিযোগ, ‘‘চাঙড় খসে পড়ে অনেকে আহত হয়েছেন। তার উপরে দূরপাল্লার ট্রেন থেকে শৌচের জল মাথায় এসে পড়ে।’’
পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শুধু ওই অংশ নয়, দমদম থেকে যে রাস্তাটি রেললাইন বরাবর পাতিপুকুরের দিকে গিয়েছে, সেখানেও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। দক্ষিণ দমদম থেকে চিড়িয়ামোড়গামী আন্ডারপাসে উপরের রেলসেতু যে স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে, শ্যাওলা জমেছে তার গায়েও। কংক্রিটের স্ল্যাবেও ক্ষয় ধরেছে। পাতিপুকুরগামী রেললাইনের ধারে যে দেওয়াল রয়েছে, তার স্তম্ভগুলির গোড়ায় সিমেন্টের প্রলেপ খসে কঙ্কালসার অবস্থা। দেওয়ালে সার দিয়ে গজিয়ে রয়েছে আগাছা। কিছু জায়গায় দেওয়াল বেয়ে মোটা গুঁড়ির গাছ পর্যন্ত বেড়ে উঠেছে। সেগুলির শিকড়ের চাপে দেওয়ালের জরাজীর্ণ অবস্থা। ওই দেওয়ালের পাশেই পরপর রয়েছে একাধিক দোকান। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে দেওয়াল ভেঙে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মুনমুন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভা আগাছা সাফাই করতে গেলে রেল বাধা দেয়। দেওয়াল নিয়ে আতঙ্কের কথা স্থানীয়েরা আমাকেও বলেছেন।’’ তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ প্রবীর পাল বলেন, ‘‘পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন সেতুর নীচের অংশের মেরামতি চেয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে একাধিক চিঠি দিয়েছি। লাভ হয়নি।’’
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের এক কর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রেলের ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণ করে রেল নিজেই। এর জন্য ত্রিস্তরীয় ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ব্যবস্থা অনুযায়ী সব ব্রিজেই নজরদারি চালানো হয়। বর্ষার আগে ব্রিজগুলির অবস্থা ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা হয়। মেরামতির প্রয়োজন হলে জরুরি ভিত্তিতে সেই নির্দেশও দেওয়া হয়। যে ব্রিজগুলির নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি আয়ুসীমার মধ্যেই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy