অটো-দৌরাত্ম্যের অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষেবা বন্ধ করে দিল ডানলপ-ধর্মতলা রুটের বেসরকারি বাস। গত শনিবার থেকে চার দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বরাহনগরে তৃণমূলের স্থানীয় দুই গোষ্ঠীর অন্তর্কলহ বাস-অটোর এই ঝামেলার পিছনে মূল কারণ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরে ডানলপ থেকে গোপাললাল ঠাকুর রোড, কাশীনাথ দত্ত রোড, সিঁথির মোড় হয়ে বিটি রোড দিয়ে ধর্মতলা যেত ৩৪বি রুটের বাস। আগে ৬০টি মতো বাস চললেও এখন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৪৩টিতে। ওই বাস শ্রমিক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি হলেন বরাহনগরের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান রামকৃষ্ণ পাল। বাস কর্মচারীদের অভিযোগ মাস ছয় আগে আচমকা সিঁথির মোড় পুরনো চার নম্বর বাস স্ট্যান্ড থেকে ডানলপ পর্যন্ত অটো চালু হয়। যার ফলে ডানলপ থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত কোনও যাত্রী পাচ্ছিল না ওই রুটের বাস। সূত্রের খবর, অটো রুটের দায়িত্বে রয়েছেন রামকৃষ্ণবাবুর প্রতিপক্ষ বলে পরিচিত প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সুবীর চট্টোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ক’মাস আগে যাত্রী তোলা নিয়ে বাস ও অটোকর্মীদের মধ্যে বচসা ও মারামারি হয়। প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসকর্মীরা। এর পরেই স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তখন দু’পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা প্রাথমিক ভাবে মিটে যায়। তাপসবাবু বলেন, ‘‘রামকৃষ্ণ ও সুবীর দু’জনের সঙ্গেই কথা বলে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে বলেছিলাম। মিটেও গিয়েছিল।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এর পরে সিঁথির মোড় থেকে বনহুগলি পর্যন্ত ১২টি অটো চলতে পারবে বলে জানিয়ে দেন রামকৃষ্ণবাবু। বিষয়টি তখনকার মতো মেনে নেন সুবীরবাবুরা। তবে মে মাসে বরাহনগরে চেয়ারম্যান ঘোষণা হওয়ার পরে রামকৃষ্ণবাবুরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। তখন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব রামকৃষ্ণবাবুকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। বাসকর্মীদের অভিযোগ, ওই ঘটনার পরেই রাতারাতি অটোগুলি ডানলপ পর্যন্ত চলতে শুরু করে। তাতে ফের যাত্রী নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়।
যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি রামকৃষ্ণবাবু। সুবীরবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘বাস সংগঠন এক প্রকার মস্তানি করে অটো চলতে দিচ্ছিল না। তাই সুযোগ পেয়ে আমরাই বা ছাড়বো কেন?’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘ডানলপ থেকে বরাহনগর বাজার পর্যন্ত বাস ও অটোর রুট এক ছিল। তা নিয়ে বিশেষ সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর রামকৃষ্ণবাবুও তো প্রথমে অটো চালুর পক্ষে ছিলেন।’’
বাস বন্ধের কথা শুনে বিধায়ক তাপসবাবু বলেন, ‘‘রাজনীতির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত রাগারাগি চলবে না। বাস বন্ধ থাকা মানে নাগরিকদের সমস্যা হওয়া। এটা ঠিক নয়। আমি সব স্থানীয় নেতৃত্বকে বলেছি সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা মেটাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy