Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2020

শিশিরে নষ্ট পদ্ম, পুজোর জোগানে টান

পুজোয় পদ্মের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে বলেই মত চাষিদের।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০১
Share: Save:

মলমাস পেরিয়ে দুর্গাপুজো। আর তাতেই মাথায় হাত ফুলচাষিদের।

দুর্গাপুজো হোক কিংবা লক্ষ্মীপুজো—পদ্মফুলের চাহিদা রয়েছে দুই পুজোতেই। এক দিকে করোনা, অন্য দিকে প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, দুইয়ের প্রভাবে এই বছর অন্য ফুলের মতোই ক্ষতিগ্রস্ত সেই পদ্মের চাষ। ফলন কম হওয়ায় এ বার পুজোর মরসুমে পদ্মের চাহিদা থাকলেও জোগান কম থাকবে বলেই জানাচ্ছেন ফুলচাষিরা। তার জেরে পুজোয় পদ্মের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বাড়বে বলেই মত চাষিদের।

কেন এই অবস্থা?

ফুলচাষিরা জানাচ্ছেন, আশ্বিনের বদলে এ বার দুর্গাপুজো পড়েছে কার্তিক মাসে। ঋতুর দিক থেকে বিচার করলে পুরো বর্ষা এবং শরতের শুরু পর্যন্ত পদ্মের ফলন হয়। তাই দিয়েই দুর্গাপুজো এবং লক্ষ্মীপুজোয় বাজারে পদ্মফুল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এ বার পুজোর আগেই হেমন্তকাল শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই গ্রাম বাংলায় শিশির পড়াও শুরু হয়েছে। সেই শিশিরেই গ্রামাঞ্চলের জলাশয়ে নষ্ট হচ্ছে পদ্ম।

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ নায়েক জানান, পদ্মের চাষ হলেও করোনার কারণে চাষিরা সে ভাবে ফুলের পরিচর্যা করতে পারেননি। ফলে এ বার পদ্মের চাষ ভাল হয়নি। তিনি বলেন, “অষ্টমীতে ১০৮টি পদ্মের প্রয়োজন সব পুজোতেই থাকবে। কিন্তু চাষিরা কতটা জোগান দিতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বছর পদ্মফুলের উৎপাদন তুলনায় কম হয়েছে।”

উল্লেখ্য লকডাউনের সময়ে গাছ বাঁচাতে ফুল ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন চাষিরা। ফলে করোনায় ফুলচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারই মধ্যে আসা আমপানে ফুলের গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষিদের অভিযোগ, রাজ্য হর্টিকালচার দফতরের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েও লাভ হয়নি। নারায়ণবাবু বলেন, “এই পরিস্থিতিতে পুজো আসছে। ফুলের দাম বাড়বেই।” তিনি জানান, শনিবার নবরাত্রিতে পাইকারি বাজারে পদ্ম প্রতিটি ১৫-১৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। পুজোয় ওই দাম খোলা বাজারে ২৫-৩০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে।

কোলাঘাট থেকে প্রতিদিন মল্লিকঘাটে ফুল নিয়ে আসেন সনাতন দাস। তিনি বলেন, “অন্যান্য বছর বন্যা বা অতিবৃষ্টির কারণে ফুলচাষের ক্ষতি হলেও উৎসবের মরসুমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে যায়। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে পদ্ম-সহ বিভিন্ন ফুলের চাষও মার খেয়েছে। সেই সঙ্গে হেমন্তের শিশির পড়তে শুরু করায় পদ্মফুলেরও ক্ষতি হচ্ছে।”

মল্লিকঘাটের ফুলচাষিদের একাংশ জানান, লোকাল ট্রেন বন্ধ। তাই চাষিরা বাজারে আসতে পারছেন না। মল্লিকঘাটে ২৪৪টি ফুলের দোকান রয়েছে। তার মধ্যে খোলা মাত্র ৫০-৬০টি দোকান। এক ফুলচাষির কথায়, “এ বার পরিস্থিতি অন্য রকম। চাষিদের বড় অংশ কলকাতার বাজারে ফুল সরবরাহ করতে পারছেন না। নিজেদের জায়গায় তাঁদের ফুল বিক্রি করতে হবে। অনেকে বিশেষ ট্রেন ও বিমানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ভিন্ রাজ্যে ফুল পাঠানো শুরু করেছেন। মল্লিকঘাটে দোকান কম খোলায় পদ্ম-সহ বিভিন্ন ফুলের জোগানও কম।”

তবে চাষিদের আশা, পুজোর সময়ে হয়তো ১০০টির মতো দোকান খুলতে পারে মল্লিকঘাটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Lotus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE